রাজশাহীর যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন রাসেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম উজ্জল আলী নয়ন (৩০)। নগরীর শিরোইল স্টেশনপাড়া এলাকায় তার বাড়ি। বাবার নাম কালু শেখ।
রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গত বুধবার দুপুরে রাসেলের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রাজার ওপর হামলা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে ছুরির আঘাতে জখম হন রাসেল। পরে তার মৃত্যু হয়। হামলায় রাজাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। রাজার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
ঘটনার পর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অস্ত্রপচারের পর রাখা হয়েছিল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। শুক্রবার সকালে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রাজা রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর হামলায় নিহত তার ভাই রাসেল মহানগর যুবলীগের সদস্য।
সূত্র জানায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) একজন কাউন্সিলর তার দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই সাঈদ মাহমুদ হিমেলের মাধ্যমে রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। হিমেলকে দিনের অধিকাংশ সময় রাজশাহীতে পশ্চিম রেলের প্রধান কার্যালয়ে দেখা যেত। তার মাধ্যমেই টেন্ডারের নিয়ন্ত্রণ নেয় আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকারী আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অন্য গ্রুপগুলোর মধ্যে। ছুরিকাঘাতে আহত রাজা এ রকম একটি গ্রুপের নেতা।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে ছয়টি গ্রুপে ট্রেনের মালপত্র বিক্রির জন্য দরপত্র বাক্স খোলা হয়। ওই ছয়টি কাজ হিমেলের মাধ্যমে ঢাকার কয়েকজন ঠিকাদারকে পাইয়ে দেওয়া হয়। পরদিন বুধবারও তারা আরো ছয়টি কাজ পাইয়ে দিতে প্রভাব সৃষ্টি করেন সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক বেলাল উদ্দিনের ওপর। এ নিয়েই রাজার সঙ্গে তার দেখা দেয় দ্বন্দ্ব। আর সেদিনই রেলভবনের পাশে রাজার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন রাসেল।
রাসেল হত্যার ঘটনায় তার আরেক ভাই মনোয়ার হোসেন রনি বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর বুধবার রাতেই পুলিশ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার সকালে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নয়নকে গ্রেপ্তার করা হলো।