বাঘা প্রতিনিধি:
পেঁয়াজের সংকটের কারণে দাম যখন আকাশ ছোঁয়া, দেশ তোলপাড়। পেঁয়াজের লাগামহীন দাম নিয়ে আলোচনা চলছে নিজ ঘরে হতে শুরু করে রাস্তা- ঘাট, হাট-বাজার, চায়ের দোকান ছাড়াও ফসলের মাঠে।
তখন রাজশাহীর বাঘায় বাজার মনিটরিং এ নামে প্রশাসন। এসময় কিছুটা হলেও কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা। কোন কোন বাজারে ২০০ টাকার পেঁয়াজ কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি করেছেন তারা। তবে দু’একদিনের মধ্যে দাম আরো কমবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করেন প্রশাসন। কোন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা না হলেও বেশী দামে পেঁয়াজ বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারী দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজার নের্তৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন বাজারসহ কয়েকটি কাঁচাবাজারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন, জনপ্রতিনিধি আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী, পুলিশ অফিসার নজরুল ইসলাম ও স্থানীয় সংবাদকর্মী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি দোকানে পেঁয়াজের পাশাপাশি শাকসবজির মূল্য তালিকাও প্রদর্শনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে অভিযানের খবর জানতে পেরে কোন কোন ব্যবসায়ী দোকান থেকে পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলেন। অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে সটকে পড়েন।
নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা জানান, নায্য দামে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কি না তা মনিটারিং করতেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ব্যবসায়ীদের জরিমানা না করে সতর্ক করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালানো হয়েছে। সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজ মজুদারদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে ।
এর আগে সুভাষ চন্দ্র নামের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পনের মণ পেঁয়াজ জব্দ করে পুলিশ। তবে মজুতকৃত সব পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করে দেওয়ার শর্তে ছাড় পান তিনি। শনিবার রাতে পেঁয়াজগুলো জব্দের পর উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) শাহিন রেজার কাছে মুচলেকা দেন ব্যবসায়ী সুভাষ চন্দ্র। তার বাড়ি উপজেলার বাউসা গ্রামে। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রামের অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ মজুত রাখছেন, এমন খবরে অভিযানে নামে পুলিশ। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত সিন্ডিকেট ভাঙতে, বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালানো হবে।
বাঘা বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন,পাইকারি দরে তার পেঁয়াজ কেনা ছিল ১৯০ টাকা কেজি হিসেবে। সেই পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন ২০০ টাকা কেজি দরে। প্রশাসনের বাজার মনিটরিং এর পর বিক্রি করছেন ১৮০ টাকা কেজি দরে। স্বপন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন,পাইকারি দামে কেনার পর কেজিতে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করি। চরাঞ্চল ছাড়াও বাউসা ও আড়ানী এলাকার প্রায় ব্যবসায়ীরা ১৫ থেকে ৫০ মণ করে পেঁয়াজ মজুত রেখেছেন। দাম বাড়লে তারা বিক্রি করছেন। যারা মওজুত রেখেছে তাদের ধরে বাজারে পেঁয়াজ ছাড় করতে পারলে দু’দিনের মধ্যে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমে যাবে। এছাড়াও প্রশাসনের নজরদারি বাড়িয়ে প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করে তা হলে সিন্ডিকেট থাকবে না।
রাজশাহীর বাঘায় উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার সব এলাকাতে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজের চাষ হয়। বাঘার পদ্মার ১৫টি চরে পেঁয়াজ চাষে লাভবান হচ্ছে চরের কৃষকরা। উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজশাহীর বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। সেই হিসেবে বাঘায় পেঁয়াজের সংকট হওয়ার কথা নয়। এখন নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠতেও শুরু করেছে। তবুও দেশের অন্যান্য স্থানে বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানেও বাড়ানো হয়েছে।
স্ব.বা/বা