মামলার তদন্তকালে উৎকোচ না দেয়ায় মিথ্যা প্রতিবেদন জমা : পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: ২০ হাজার টাকা উৎকোচ না দেওয়ায় মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টিএম সেলিম রেজা বিরুদ্ধে। এনিয়ে মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি আসাদুজ্জামান আসাদ। আসাদ বাংলাদেশ ফটোজার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর রাজপাড়া থানার কাজিহাটা মৌজায় ছয় কাঠা পরিমাণের পৈত্রিক ভিটায় আমরা একই পরিবারে প্রায় ৭০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। জমিটির জেএল নম্বর সাবেক ২০৬, হালের মধ্যে যার সিএস খতিয়ান নম্বর ৬৪, এসএ খতিয়ান নম্বর ১০২, আরএস খতিয়ান নম্বর ২৮, সিএস দাগ নম্বর ১৫৪, ১২৭, এসএ দাগ নম্বর ১৯০, ২৪০, আরএস দাগ নম্বর ২৬৫, ২৬৬ ও ২৯২।

হঠাৎ ২০০২ সালে শহরের চিহ্নিত ভূমিদস্যু নগরীর গণকপাড়ার আবদুল মালেকের ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জাল দলিল তৈরি করে ভিটাটি তার নিজের বলে দাবি করে দখলে নিতে যান। জাহিদুল তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গিয়ে আমার পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমার বাবা মৃত আশরাফ হোসেন ২০০২ সালে আদালতে মামলা করেন। জমিটি নিয়ে নি¤œ আদালত এবং উচ্চ আদালতে মামলা চলমান। তারপরেও জাহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই মেসবাহ উদ্দিন বিভিন্ন সময় আমাদের ভিটায় গিয়ে উচ্ছেদের হুমকি দিতে থাকেন।

এ অবস্থায় চলতি বছরের গত ১০ জুন মেসবাহ উদ্দিন আদালতে আমি (আসাদ), আমার এক ভাই ও চার বোনকে আসামি করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও মারপিটের মিথ্যা অভিযোগে জেলা রাজশাহীর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৬৪পি/২০১৯। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য রাজপাড়া থানায় পাঠান।

থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টিএম সেলিম রেজা (বিপি-৭৬০১০২৮৬৭৮) মামলার তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত চলাকালে তিনি ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় আমি নিজেই থানায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। আমি তাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানাই। এজাহারে ঘটনাস্থল হিসেবে যে স্থান দেখানো হয়েছে সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেই যেন প্রতিবেদন তৈরি করা হয় সেই অনুরোধও করি। তখন এসআই টিএম সেলিম রেজা আমাকে বলেন, আপনার এতো চিন্তা করার দরকার নাই। আমাকে শুধু হাজার বিশেক টাকা দিয়ে যান, তাহলেই হবে। কিন্তু আমি তাকে টাকা দিতে পারিনি। তাই তিনি ঘটনাস্থলেও যাননি।

এরপর গত ৮ সেপ্টম্বর তিনি আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই প্রতিবেদনে মামলায় যে অভিযোগ আনা হয় সেসবই তুলে ধরা হয়েছে। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলেই যাননি। আমার কোনো প্রতিবেশির সঙ্গেও তিনি কথা বলেননি।

পরে আমি (আসাদ) জানতে পারি মামলার বাদীর চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিয়েছেন। তাই তিনি আমার বিপক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

আসাদ দাবি করেন, এসআই টিএম সেলিম রেজাকে উৎকোচ না দেয়ার কারণে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এই ঘটনায় আরো তদন্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানায়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, রাজশাহী ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি মামুন অর রশিদ, বিটিভির রাজশাহী প্রতিনিধি আজিজুল ইসলাম, ফটোজার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সামদ খানসহ ফটোজার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *