রাজশাহী পলিটেকনিক অধ্যক্ষকে পানিতে ফেলার মামলায় মূলহোতাসহ ৫ আসামি গ্রেফতার

রাজশাহী লীড শিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনকে লাঞ্ছিত এবং পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার ঘটনায় মূলহোতাসহ পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অধ্যক্ষের দায়ের করা মামলার মূল পাঁচ আসামিকে সোমবার দিবাগত রাতে রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ বেলপুকুর থানার বিসমিল্লাহ পেট্রল পাম্পসংলগ্ন মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের সদ্যবহিষ্কৃত যুগ্মসম্পাদক মামলার এক নম্বর আসামি কামাল হোসেন সৌরভ, দুই নস্বর আসামি মুরাদ, তিন নম্বর আসামি শান্ত, ছয় নম্বর আসামি সালমান ওরফে টনি এবং সাত নম্বর আসামি রায়হানুল হাসান হাসিব। তারা সবাই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতাকর্মী।

আরএমপি মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এবং বেলপুকুর থানা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ মামলার মূল আসামিদের গ্রেফতার পুলিশের বড় সাফল্য।

গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। এ নিয়ে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের করা মামলায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো। এ ছাড়া জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত মিডটার্মে ফেল এবং ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে গত ২ নভেম্বর সকালে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওই দিন দুপুরে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার পর টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়।

এ নিয়ে রাতে মামলা করেন অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫৭ জনকে আসামি করে ওই রাতে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ।

এদিকে ঘটনা তদন্তে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পিআইডব্লিউ) এসএম ফেরদৌস আলম।

অন্য দুই সদস্য ছিলেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) ড. নুরুল ইসলাম এবং রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর ফারুক। তারা দুদিন ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুকুরের পানির গভীরতা পরীক্ষা করেন।

তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলেরও সন্ধান পায়। অবশেষে গত ৭ নভেস্বর কমিটির প্রধান কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম মহাপরিচালক রওনক মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

এ ছাড়া ২ নভেম্বর রাতেই ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে ঘটনাটি তদন্ত করছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ।

তিন দিনের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা শেষ হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। একই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *