শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ দিয়ে ৮ বছর চাকরির অভিযোগ

রাজশাহী লীড শিক্ষা

পুঠিয়া প্রতিনিধি: শামীম আরা খাতুন। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০১১ সালে শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদের মাধ্যমে নিয়োগ নেন। নিয়োগের এক বছরের মধ্যে এমপিওভুক্তি হয়।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ শে অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রাক্তন উপ-পরিচালক আজাদ হোসেন চৌধুরী এবং শিক্ষা পরিদর্শক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করলে (সহকারী শিক্ষক শারীরিক শিক্ষা) শামীমআরা খাতুনের এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন এর সনদ সঠিক না বলে প্রতিবেদন দেন যাহার স্মারক নং ডিআইএ/রাজশাহী/২১৬-এস/রাজঃ১৮৮০/৬ এবং এনটিআরসিএ পত্র প্রেরণ করেন যাহার স্মারক নং ডিআইএ/রাজশাহী/২১৬-এস/রাজঃ ৩০৯৩, তারিখ ২৬/০১/২০১৫ মোতাবেক এনটিআরসিএ তে এবং এনটিআরসিএ এর কর্তৃপক্ষ শামীম আরার নিবন্ধন সনদপত্রটি সঠিক নহে মর্মে তাহার স্মারক নং- বেশিনিক/শি.শি./সনদ যাচাই(সকল)/৪৪৮(অংশ-৩)/২০১৫/৮৮, তারিখঃ ৫/৪/২০১৫ মোতাবেক অবহিত করে। এবং এম.পি.ও ভূক্তির তারিখ থেকে অর্থাৎ ১/১১/২০১২ ইং থেকে ৩১/১২/২০১৪ ইং তারিখ পর্যন্ত ৮,০০০/- টাকার স্কেলে গৃহীত মোট ২,৫৯,৪৯০/- টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরৎ যোগ্য হবে এবং ০১/০১/২০১৫ ইং তারিখ হতে গৃহীত টাকাও ফেরৎযোগ্য হবে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

উক্ত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শিবপুর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ২৬ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে ৭৭/১৫ নং রেজুলেশনের ৭ নং সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার কর্তৃক উত্তোলিত সরকারী বেতন ফেরৎ এবং বর্তমান বেতন ভাতা বাবদ সরকারী অংশ কেন বন্ধ করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য তাকে কারণ দর্শানোর পর হতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলন বন্ধ ছিল।

জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত ইনডেক্স ১০৬৭৯২৭ (এমপিও) নম্বরধারী হিসেবে তিনি বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন। যদিও শামীমাআরা খাতুন দাবি করেছেন, জালিয়াতির বিষয়টি তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি। পরিদর্শন করার পর জানতে পারি আমার সনদ জাল।

উত্তোলিত টাকা ফেরত দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন পরবর্তীতে তিনি সচিব মহোদয়, শিক্ষা মন্ত্রানালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় বরাবর ১৩ জানুয়ারি ১৬ ইং তারিখে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়ে সনদ পুণঃ অর্জনের নিমিত্তে অন্তত ৩ বছর সময় এবং বেতন ভাতা প্রদান চেয়ে আবেদন করেন। এতে সহকারী সচিব নুরজাহান বেগম কৃর্তৃক ২১ জানুয়ারি ২০১৬ ইং তারিখে এ প্রেরিত পত্রের প্রেক্ষিতে তার বেতন ভাতা ছাড় করেন।

জানাযায়, ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদে নিয়োগ পেয়ে যোগদান করেন শামীমা আরা খাতুন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০০৯ সালের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে এই চাকরি পান। যার রোল নম্বর ৩১৯১৪৪৭৩ , রেজি. নম্বর ৯০০০২৮৫৩/২০০৯। ২০১২ সালের ১ নভেম্বর এমপিওভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নম্বর ১০৬৭৯২৭।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরাবিয়া সুলতানা বলেন, ২০১৪ সালের ২০ শে অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর পরিদর্শন করলে নিবন্ধন সনদ জাল বিষয়টি জানাজানি হলে। ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বিষয়ে শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করি। কিন্তু এ বিষয়ে এখনোও আলোর মুখ দেখেনি। পূর্বের ইনডেক্সধারী হিসেবে তিনি এখনও বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।

ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, পরিদর্শন করার পর জানতে পারি তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল। এনটিআরসিএ এর তদন্ত রিপোর্টে জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ায় রেজুলেশনের মাধ্যমে তার সরকারী বেতন ভাতা বন্ধ করা হয়। কিন্তু মন্ত্রনালয় থেকে সহকারী সচিব এর নির্দেশক্রমে বেতন ভাতা ছাড় এবং দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখতে অনুরোধ জানালে আমরা তার বেতন ভাতা ছাড়সহ সকল কাজে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন দায়িত্তে এসেছি এবিষয়ে কিছু জানিনা।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: জাহেদুল হক জানান, এবিষয়ে আমার কিছু বলার নাই এইটা উপর মহলে চলে গেছে বলে এই র্কমর্কতা জানান। সূত্র: পদ্মা টাইমস।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *