নির্বাচনের মাধ্যমে রাজশাহী জেলা আ.লীগের নেতা চান তৃণমূল নেতাকর্মী

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন রোববার (৮ ডিসেম্বর) হতে শুরু হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনেই ঠিক হবে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, কাউন্সিলরদের ভোটেই যেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।

রাজশাহীর মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। প্রধান অতিথি থাকবেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতারাও অংশ নেবেন।

এ সম্মেলন ঘিরে নানা সমীকরণ কষছেন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আর পদ পেতে আগ্রহী নেতারা যোগাযোগ করছেন শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দু’টি পদ পেতে এবার আগ্রহীদের তালিকাও বেশ লম্বা দেখা যাচ্ছে। এই তালিকা দীর্ঘ হতে হতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই ডজনে গিয়ে ঠেকেছে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ক্ষমতাসীন দলটির জেলার সম্মেলনের আগের দিন পর্যন্ত এই তালিকা বাড়তে থাকবে।

এদিকে কাউন্সিলররা তাদের ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন, নাকি কেন্দ্রীয় নেতারা এসে সভাপতি-সম্পাদক পদে দু’জনকে বসিয়ে দিয়ে ঢাকায় দৌঁড় দেবেন এ নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। তবে তৃণমূলের নেতারা দাবি করেছেন, দু’টি শীর্ষ পদে নির্বাচন করে নেতৃত্ব আসুক। তাহলে ত্যাগী, জনপ্রিয় এবং পরিক্ষিত নেতারাই নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাবেন। তা না হলে দেখা দিতে পারে বিশৃঙ্খলা।

জানা গেছে, এ সম্মেলনে অংশ নিবেন প্রায় ৩৫০ জন কাউন্সিলর। এর মধ্যে জেলা কমিটির নেতা রয়েছেন ৬৪ জন। আর উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটি থেকে থাকবেন বাকি কাউন্সিলররা। তারা সবাই চান ভোট দিতে।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, এবার আমাদের চাওয়া কাউন্সিলরদের ভোটে দু’টি পদে অন্তত নেতৃত্ব নির্বাচন করা হোক।

দলীয় সূত্র মতে, এবার রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি পদে প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, বর্তমান জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, সাবেক এমপি রায়হানুল ইসলাম রায়হান, সাবেক এমপি জিন্নাতুন নেছা তালুকদার, সাবেক এমপি কাজী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, জেলার বর্তমান সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল খানসহ আরও কয়েকজন।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান আসাদ, আহসানুল হক মাসুদ, বাগমারা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু, চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম।

এছাড়া আরও কয়েকজন নেতা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, এবার সভাপতি পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনাই বেশি। গত ৫ বছর ধরে নানা বিষয়ে বিতর্কের শীর্ষে থাকা বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর এবার কপাল পুড়তে পারে বলেই ধরে নিচ্ছেন দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী। এক্ষেত্রে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক রক্ষাকারী হিসেবে পরিচিত দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।কাউন্সিলররা ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে তিনি নিশ্চিতভাবেই সভাপতি হচ্ছেন এমনটা মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

তবে সভাপতি ওমর ফারুকের সমর্থকরা অবশ্য কাউন্সিলরদের ভোট চাইছেন না। তারা চান, কেন্দ্রই ঠিক করে দিক নতুন সভাপতি-সম্পাদক। তবে ভোট না হলেও দলের প্রয়োজনে আসাদকে সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে অন্তত একটি পদে রাখা হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকেই।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিাল ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। ওই সম্মেলনে শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে চলে যান কেন্দ্রীয় নেতারা। এর প্রায় এক বছর পর পুর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। গত সম্মেলনে এই কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদক পেতে আগ্রহীদের তালিকা ছিল সর্বসাকুল্যে ডজন খানেক। কিন্তু এবার তালিকাটা বেশ লম্বা। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *