চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ভোরে মহানন্দা নদীর পাদদেশ রেহাইচরে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লড়াকু বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।
১৫ই ডিসেম্বর তার মরদেহ ঐতিহাসিক সোনামসজিদ প্রাঙ্গনে সমাহিত করা হয়। ৭১ এর ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তানি সেনা এবং তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আল-সামস বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে হানাদার মুক্ত করে। শেষ অপারেশনের অংশ হিসেবে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, লেফটেন্যান্ট কাইয়্যুম, লেফটেন্যান্ট আউয়ালসহ ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়াা এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করেন।
১৪ ডিসেম্বর ভোরে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বারঘরিয়া থেকে নৌকায় মহানন্দা নদী অতিক্রম করেন। এরপর একটি একটি করে শত্রু অবস্থানের দখল নিয়ে দক্ষিণে এগোতে থাকেন। যখন আর একটি মাত্র শত্রু অবস্থান বাকি এমন সময় মুখোমুখি সংঘর্ষে বাংকার চার্জে শত্রুদের বুলেট এসে বিদ্ধ হয় জাহাঙ্গীরের কপালে। শহীদ হন তিনি। ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যেই তাদেরও পরাস্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা। আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ১৫ ডিসেম্বর।
দেশের সর্বশেষ বিজয় অর্জনের ২ দিন আগে শাহাদাত বরণ করায় বিজয় দেখে যেতে পারেননি দেশের এই শ্রেষ্ঠ সন্তান মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জের রহিমগঞ্জ গ্রামে ৪৯ সালের ৭ই মার্চ বাবা আব্দুল মোতালেব ও মা সাফিয়া খাতুন এর সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্থানের করকোরাম এলাকায় ১৭৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নে ক্যাপ্টেন হিসাবে যোগ দেন তিনি।
একই বছরের ৩ জুলাই শিয়ালকোর্টের সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যোগদেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে ৭ নং সেক্টরের মোহদিপুর সাব সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয় ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরকে। স্বাধীনতা অর্জনের পর বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।
স্ব.বা/শা