বাগাতিপাড়ায় জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রশাসনের চাঁদাবাজির অভিযোগ

রাজশাহী লীড

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় মহান বিজয় দিবস উদযাপনে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইট ভাটা, এনজিও, বিভিন্ন পণ্যের ডিলার সহ অনেক প্রতিষ্ঠান মালিক কে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

সরকারী বরাদ্ধ থাকলেও এভাবে জুলুম করে চাঁদা আদায় করায় উপজেলার বিভিন্ন মহলে অসোন্তষ দেখা দিয়েছে। তবে এ বিষয়য়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল টাকা নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ধরণের দিবস উদযাপনে টাকা নেয়ার নিয়ম রয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ১৬ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জুলুম করে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমপিও ভুক্ত স্কুল-কলেজ এর এক হাজার ও ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচ শত টাকা করে দিতে বাধ্য করার অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। এছাড়াও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ইট ভাটা, এনজিও, বিভিন্ন পণ্যের ডিলার সহ অনেক প্রতিষ্ঠান মালিক কে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের ধার্য্যকৃত টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

আনোয়ার হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ী দাবি করেছেন, লাইসেন্স করে বৈধ ব্যবসা করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন অথচ তাঁর ভালো ব্যবসা হয় বলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমাদের প্রত্যক স্কুলে জাতীয় সকল দিবস নিজস্ব উদ্যোগে পালন করা হয়। তারপরেও বছরে একাধিক বার উপজেলা প্রশাসনকে চাঁদা দিতে হয়। এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ধার্যকৃত চাঁদার পরিমান বেশী হওয়ার শিক্ষক সমাজের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বিজয় দিবস অনুষ্ঠান স্থলে আমাদের শিক্ষকদের জন্য সামান্য বসার চেয়ারের ব্যবস্থা পর্যন্ত ছিলোনা।

বাগাতিপাড়া প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি আল আফটাব খান সুইট দাবি করেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে বাধ্য করা হচ্ছে প্রশাসনের নির্ধারিত চাঁদা দিতে এমন অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নাই। এছাড়াও বাগাতিপাড়ায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনায় যোগাযোগ করলেও প্রশাসন সহযোগিতা করেন না বলে দাবি করা হয়।

দৈনিক ইত্তেফাকের বাগাতিপাড়া সংবাদদাতা আরিফুল ইসলাম তপু বলেন, উপজেলা প্রশাসনের চাঁদাবাজি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীন দেশে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়ে তার এ ধরনের চাঁদাবাজি ঠিক না। এভাবে চাঁদা নেয়ার কারণেই ভেজাল বিরোধী অভিযানে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা দেখা যায়, যা হতাশাজনক!

এদিকে বাগাতিপাড়া মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি দৈনিক জনতা ও লালগোলাপের বাগাতিপাড়া প্রতিনিধি আবুল কালাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহান বিজয় দিবস উদযাপনে চাঁদাবাজি হচ্ছে এমন একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়। কেন চাঁদা আদায় হচ্ছে?

এমন প্রশ্নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেছেন এ ধরণের দিবস উদযাপনে টাকা নেয়ার নিয়ম রয়েছে। আমার সরকারী বরাদ্ধ সামান্য, কিন্তু অনুষ্ঠান করতে খরচ হবে দুই লাখ টাকা।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *