রাজশাহীর বাগমারার ৩ গ্রামে হাইভোল্টেজ সাউন্ড সিস্টেম দিয়ে গান বাজানো স্থায়ী ভাবে নিষিদ্ধ

বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

বাগমারা প্রতিনিধি: শব্দদূষণ বাংলাদেশের একটি মারাত্বক সমস্যা। যার অন্যতম মাধ্যম হলো হাইভোল্টেজ সাউন্ড সিস্টেম। যা আজকাল পথে প্রান্তরে ভ্রমনে, বিয়ে, খাৎনা, জন্মদিন, থার্টিফাষ্ট, পিকনিক, হালখাতা সহ যাবতীয় কাজে নিত্যসঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে।

তবে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া, পারিলা এবং শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়িগ্রাম (কাঁওপাড়া) গ্রামে মিলছে ভিন্ন চিত্র। এসব গ্রামের সমাজ পতিগণ শব্দদূষণ প্রতিরোধে পৃথক তিনটি বৈঠকের মাধ্যমে এই গ্রামগুলোতে হাইভোল্টেজের সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজনা করা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ বলে ঘোষনা করেছেন।

এ বিষয়ে কোয়ালীপাড়া গ্রামের মসজিদের ইমাম তৈয়ব আলী ও জাহাঙ্গীর আলম, পারিলা গ্রামের আলহাজ আফসার আলী এবং বাড়িগ্রাম ( কাঁওপাড়া) গ্রামের প্রভাষক মাহাবুর রহমান মনির সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ বিয়ে বাড়ি, জন্মদিন, সুন্নতে খাৎনাসহ নানা কারনে-অকারনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে হাইভোল্টেজের সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করে এনে গান বাজনা করা হয়।

শুধু তাই নয় এমন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) দের ভাড়া করে এনে নারী পুরুষ সবাই মিলিত হয়ে একসাথে নাচা-নাচী করে। যা সমাজে অনেকটা খারাপ প্রভা্ব ফেলে। আর এসময় পার্শবর্তী সাধারণ মানুষ বা অসুস্থ রোগী, শিশুরা অসহনীয় যন্ত্রনায় ভোগেন। এমন পরিস্তিতি হতে রেহায় পাওয়ার জন্য নিষেধ করতে গেলে উল্টো তাদেরকেই খেতে হয় গাল মন্দ। তারা মানে না কোন নিয়ম-কানুন, নামাজের কিংবা পরীক্ষার সময়।

এমন অনিয়মের মাত্রা অতিরিক্ত অসহনীয় হবার কারনে এই এলাকার সাধারন সচেতন মানুষ গ্রামে পৃথক তিনটি বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং গত জুম্মার নামাজ শেষে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে ইমাম গন এই বক্তব্য পেশ করেন।

সেই সাথে তারা আরো বলেন, পহেলা জানুয়ারি হতে এই নিয়ম মেনে চলার জন্য সকলকে আহবান জানানো হল। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ গুলোকে ও তারা সাধূবাদ জানান।

তারা বলেন, এই দিনে দেশের কোটি কোটি টাকার অপচয় সহ নানা অপকর্ম, অঘটন ঘটে। সমাজের এমন অবক্ষয় রোধে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত যেন দীর্ঘ মেয়াদী রুপ নেয় সে বিষয়ে তারা যথাযত কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলার ২ নং নরদাশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান (মতিন) বলেন, ‘শব্দদূষণ অবশ্যই একটি মারাত্বক সমস্যা, গ্রামবাসিদের এমন সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই। এর ফলে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা অনেক স্বস্থিতে নামাজ- রোজা করা সহ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সমাজ থেকে অশ্লীলতা কমে যাবে।

সর্বপরি মাত্রাতিরিক্ত কোন কর্মকান্ড যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এমন কোন কাজকে প্রশ্রয় দেয়া কারো কাম্য নয়। তবে সহনীয় পর্যায়ের সুস্থ্য বিনোদন বা খেলাধূলা শিশুদের মানষিক বিকাশে সহায়ক বলে আমরা মনে করি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *