আল্লাহর নেয়ামত দুনিয়ার সব মানুষ গুনেও শেষ করতে পারবে না: মাও. মুরশিদ আলম

চারণ সংবাদ বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: সাতবাড়ীয়া ইসলামিয়া মাদরাসা ও ওয়াক্তিয়া মসজিদের উন্নয়নকল্পে ২য় বার্ষিক তাফসীরুল কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর মতিহার থানাধীন সাতবাড়ীয়া বটতলা মোড়ে বাদ আসর হতে উক্ত তাফসীরুল কুরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে প্রধান আলোচক হিসেবে তাফসীর পেশ করেন বাংলাভিশন ও এশিয়ান টিভির আলোচক এবং রাজশাহী মহানগর মুফাসসির পরিষদের প্রচার সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মোস্তাকিম বিল্লাহ।

দ্বিতীয় আলোচক হিসেবে তাফসীর পেশ করেন, সাঁকোপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মােঃ মুরশিদ আলম ফারুকী লালমনিরহাট।

সাতবাড়ীয়া ইসলামিয়া মাদরাসা ও ওয়াক্তিয়া মসজিদের সভাপতি মোঃ হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাসিকের ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মাসুদ রানা শাহীন।

তাফসীরে দ্বিতীয় আলোচক সাঁকোপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মােঃ মুরশিদ আলম ফারুকী লালমনিরহাট বলেন, আকাশ ও পৃথিবীতে আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামত রয়েছে। আল্লাহর যত নেয়ামত রয়েছে, সেগুলো গুনে শেষ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই নেয়ামতের সমপরিমাণ শুকরিয়া জ্ঞাপন করাও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহই মানুষের ভরসা। মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

তিনি বলেন, সৃষ্টিজগতের ওপর আল্লাহ তাআলার নেয়ামত এত বেশি যে দুনিয়ার সব মানুষ সমবেতভাবে সেগুলো গুনতে চাইলে তা গুনে শেষ করতে পারবে না। মানুষের নিজের অস্তিত্বই একটি বিশাল জগৎ। চোখ, কান, নাক, হাত, পা ও দেহের প্রতিটি গ্রন্থি ও শিরা-উপশিরায় আল্লাহ তাআলার অসংখ্য নেয়ামত রয়েছে। সূক্ষ্মতম ও বিস্ময়কর হাজারো যন্ত্রপাতি দিয়ে সজ্জিত প্রতিটি মানবদেহ। মানুষের শরীর যেন একেকটি ভ্রাম্যমাণ কারখানা। এর বাইরে আসমান, জমিন, পাহাড়, নদী ও অন্য অসংখ্য সৃষ্টিতে জড়িয়ে আছে আল্লাহর নেয়ামতরাজি।

মানুষের অস্তিত্ব লাভ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। কোনো মানুষ নিজ ইচ্ছায় এ পৃথিবীতে আসেনি। সব সৃষ্টির চেয়ে শ্রেষ্ঠ করে মহান আল্লাহ মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাদের জীবন-জীবিকার পথ সুগম করেছেন। চাষাবাদের জন্য জমিন উর্বর করেছেন। বাতাস, ছায়া ও অক্সিজেনের জন্য বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। পানির জন্য খাল-বিল, নদী-নালা, সাগর, ঝরনার ব্যবস্থা করেছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। মানুষের অসংখ্য কল্যাণের নিমিত্তে সূর্যের আলো জ্বালিয়েছেন। কর্মক্লান্ত দিন শেষে বিশ্রাম ও স্বস্তির জন্য রাতকে অন্ধকারময় ও কোলাহলমুক্ত করেছেন। পৃথিবীতে লাখো সৃষ্ট বস্তু থাকা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টির মর্যাদায় ভূষিত করেছেন।

পৃথিবীতে মানুষকে তিনি তাঁর প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছেন। যুগে যুগে পথভোলা মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। মানুষ আল্লাহর অবাধ্য হলেও তিনি ত্বরিত ও দ্রুত শাস্তি দেন না। তিনি তাঁর বান্দাকে তাওবা করার সুযোগ দেন। বান্দা তাওবা করলে তিনি তাকে ক্ষমার চাদরে জড়িয়ে ধরেন। বান্দা একটি ভালো কাজ করলে তিনি ১০টি প্রতিদান দান করেন। আবার কেউ একটি খারাপ কাজ করলে বিপরীতে একটি গুনাহই লেখার নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষের সুন্দর আকৃতি, রূপ-যৌবন, জ্ঞান-বুদ্ধি, সহায়-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি সব কিছুই আল্লাহর দান। এ পৃথিবী ও পৃথিবীর সব কিছু মানুষের উপকারে সৃজিত। এসব নেয়ামতের দাবি হলো আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের শ্রেষ্ঠতম পদ্ধতি হলো তাঁর ওপর ঈমান আনা। তাঁর নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালিত করা।

মাহফিল শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *