নাটোরে কামরুল হত্যার দায়ে এন এস কলেজ ছাত্র মিনহাজ গ্রেফতার

রাজশাহী লীড

নাটোর প্রতিনিধিঃ নাটোরে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী সাইন্স এন্ড টেকনোলজির (আরএসটিইউ) বিবিএর ছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদ হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

ক্যারাম খেলা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং মনের ভিতর পুষে রাখা পঞ্জীভুত ক্ষোভ থেকেই হত্যা করা হয় কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদকে। নিহত কামরুলের জুনিয়র বন্ধু নাটোর সরকারী এনএস কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্র মিনহাজ হোসেন একাই কুপিয়ে ও চোখ তুলে নিয়ে কামরুলকে হত্যা করেছে বলে দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

ইতিমধ্যে মিনহাজকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের চারদিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করে শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এই তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, সদর উপজেলার হালসা বাজারে একদিন ভ্যান রিক্সায় ওঠা নিয়ে মিনহাজ হোসেনকে দুটি থাপ্পর মারেন আরএসটিইউ এর শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদ। এরপর থেকেই মিনহাজের মনের ভিতর পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বাড়তে থাকে।

গত ৫জানুয়ারী সন্ধ্যায় কামরুল ইসলাম ওরফে জাহিদের প্রেমিকা সোনিয়ার সাথে দেখা করানোর কথা বলে হালসা নবীন কৃষ্ণপুর গ্রামের ইদুর মোড় থেকে সিনিয়র বন্ধু কামরুলকে ডেকে ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায় মিনহাজ।

সেখানে মিনহাজ তার পকেট থাকা দা বের করে কামরুলের ঘাড়ে কোপ মারে। এতে কামরুল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর উপুর্যপুরি কুপিয়ে কামরুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। এসময় পুঞ্জীভূত ক্ষোভের আক্রোশে কামরুলের একটি চোখ উঠিয়ে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেয় মিনহাজ। পুলিশ সুপার আরো বলেন,ঠান্ডা লাগার কথা বলে কামরুলের ঘাড়ে পেঁচানো চাদর নেয় মিনহাজ।

ঘাড় থেকে চাদর সরিয়ে ফেলার সাথে সাথে মিনহাজ তার কাছে থাকা দা দিয়ে কামরুলের ঘাড়ে কোপ দেয়। কামরুল দৌড়ে পালানোর সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে উপর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করা হয় কামরুলকে। এসময় কামরুল বার বার তার কাছে মাফ চেয়ে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে আকুতি জানায়। কিন্তু হিংস্র হয়ে ওঠা মিনহাজ আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে কামরুলের বাম চোখ খুঁচিয়ে উপড়ে ফেলে।

পরে কামরুলের লাশ একটি বাঁশের ঝাড়ের মধ্যে ঢালপালা দিয়ে ঢেকে রাখে এবং কামরুলের মোবাইল ফোন মাটিতে পুঁতে রাখে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা প্রকৃত মালিককে দিয়ে আসে। চাদরটি পুড়িয়ে ফেলা হয।

এই হত্যার ঘটনাটি বিভিন্নজনের কাছে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ঘটনাটি ভিন্ন কাতে প্রবাতি করার চেষ্টা করে সে। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলে সে একাই কামরুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে। এঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান মিয়া, ডিএসবির ডিআইও-১ ইব্রাহিম হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈকত হাসান, সদর থানার ওসি তদন্ত ফরিদ হোসেন প্রমুখ।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *