গোদাগাড়ী প্রতিনিধি: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শীর্ষ মাদক স্রমাট কামরুজ্জামান ওরফে কামরুকে (৪৪) অবশেষে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। ১৮ মাদক মামলা মাথায় নিয়েও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিব্যি মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন কামরু। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হন্যে হয়ে তাকে খুঁজছিল। অবশেষে সোমবার রাতে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইনও উদ্ধার করা হয়েছে। হেরোইনগুলো বিক্রির সময় গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। কামরুর স্ত্রী রোজিনা বেগমও দুধর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। এলাকায় রোজিনা ‘বিন্দু মাসী’ নামে পরিচিত। একটি মাদকের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড হলে রোজিনা সাজাভোগ করছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ীর কৃষ্ণবাটি গ্রামের জকি মণ্ডলের ছেলে কামরুজ্জামান কামরু গত ২০ বছর ধরে মাদক ব্যবসায় জড়িত। এ পর্যন্ত পুলিশ তাকে সাতবার মাদকসহ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু প্রতিবারই কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে আবার মাদক ব্যবসায় লিপ্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, রাজপাড়া ও দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১৮টি মাদকের মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, কামরুর বিরুদ্ধে সর্বশেষ তিনটি মাদকের মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল গোদাগাড়ী থানায়। এ কারণে তাকে পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছিল। সোমবার রাতে কামরুকে ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে নতুন করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও একটি মামলা করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, মাদক সম্রাট কামরুকে মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য এলাকাবাসী চাপ দিলে তিনি তার প্রতিবন্ধী এক বোনকে নিজেই হত্যা করেন। এরপর এলাকাবাসীকে ফাঁসাতে তাদের আসামি করেন। এই নিয়ে কামরুর বিরুদ্ধে এলাকায় বিক্ষোভ হলে তিনি কৃষ্ণবাটি গ্রাম ছেড়ে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার মোল্লাপাড়া এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন।
তবে তিনি সেখান থেকেই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের দুজন কর্মকর্তাকে হাত করে প্রতিবাদকারী এলাকাবাসীকে মাদকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। এজন্য এলাকাবাসী মাদক সম্রাট কামরুকে গ্রেপ্তারে একাধিকবার পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু পুলিশ এতোদিন তাকে খুঁজে পাচ্ছিল না।
স্ব.বা/শা