মিলারদের জিম্মি করে বহিরাগত চাউল ক্রয়ের অভিযোগ খাদ্যগুদামের বিরুদ্ধে

রাজশাহী লীড

পুঠিয়া প্রতিনিধি : রাজশাহীর পুঠিয়ায় একের পর এক বির্তকের জন্ম দিচ্ছে খাদ্য গুদাম। কৃষক বঞ্চিত করে ধান ক্রয়ে জটিলতা কাটতে না কাটতে আবারো স্থানীয় মিলারদের জিম্মি করে বহিরাগত চাউল ক্রয় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষক ও মিলারদের পক্ষে প্রতিবাদ করতে সয়ং মাঠে নেমেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এ সকল ঘটনার গত দু’দিন থেকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান-চাউল ক্রয় বন্ধ রয়েছে।

খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি জানুয়ারী থেকে উপজেলা খাদ্য গুদাম মোট ৩১ জন মিলারদের নিকট থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে সর্বমোট ২৬৭ মে.টন চাউল ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছেন। আর ক্রয় চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত।

স্থানীয় মিলারদের অভিযোগ, আমাদের প্রতিটি মিলে কাজ করে ১০-২৫ জন কর্মচারী জীবিকা নির্বাহ করেন। অথচ আমাদের জিম্মি করে কমিশন বানিজ্যে মেতে উঠেছেন এক শ্রেণীর স্বার্থবাদীরা। তারা আরো বলেন, গুদাম কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা ও রাজনৈতিক নেতাদের দাপটের কারণে গত ১০ বছর যাবত আমরা খাদ্য গুদামে চাউল সরবরাহ করতে পারি না। কিছু লাভের আশায় আমরা প্রতি বছর অনেক লোকসান গুনে মিল ও চাতাল সচল রাখছি।

এ বিষয়টি নিয়ে গত ৫ বছর পূর্বে স্থানীয় ক্ষমতাসিন এক র্শীষ নেতার সাথে বনিবনা না হওয়ায় তার নিদেশে গত ৪ বছর আমাদের কাগজপত্র নবায়ন বন্ধ রাখা হয়। ওই সময় গুলো ওই নেতা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে আমাদের বঞ্চিত করে ব্যবসায়ীর মাধ্যমে দুর্গাপুর গুদামে চাউল ক্রয় করেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, স্থানীয় মিলারদের কথা বিবেচনা করে গত বুধবার বিকেলে খাদ্য গুদামে গিয়ে ব্যবসায়ীদের চাউল ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। সে সময় পাবনা থেকে আসা একটি চাউল বোঝাই ট্রাক (পাবনা ট- ১১-১০৫৩) ফেরৎ পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়ম অনুসারে খাদ্য গুদাম ধান কিনবে কৃষকের নিকট থেকে আর চাউল কিনবে মিলারদের নিকট থেকে। কিন্তু এখানে তার বিপরিত। এ সকল অনিয়ম এখানে চলতে পারে না।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক চাতালকল মালিক বলেন, গত ১৩ জানুয়ারী সকালে তালিকাভূক্ত সকল মিলারদের ডাকেন খাদ্যগুদাম। সকল মিলাররা সেখানে গেলে খাদ্য কর্মকর্তা, ওসিলিটিসহ সেখানে একজন ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা, দু’জন চাউল ও ধান সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের দু’জন সদস্য উপস্থিত হয়। পরে তারা আমাদেরকে খাদ্য গুদামে চাউল সরবরাহ না করতে সাফ জানিয়ে দেন।

এ ছাড়া ওই চক্রটি লাভের একটা অংশ আমাদের দিবেন বলেও জানিয়ে দেন। আর তাদের কথা না রাখে চাউল সরবরাহ করলে বিভিন্ন অযুহাতে তা ফেরৎ পাঠানো হবে বলেও হুসিয়ারি দেন। এ ঘটনায় সকল মিল মালিকরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন।

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিলিটি) জালাল উদ্দীন ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা আলোচনা করতে মিলমালিকদের ডেকে ছিলাম। সেখানে তাদের কোনো প্রকার হুমকি বা লেনদেন বিষয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা বর্তমানে মিলারদের তালিকা অনুসারে ও মান যাচাই করে চাউল কিনছি। এ যাবত পর্যন্ত ১২২ মে.টন চাউল ক্রয় করা হয়েছে।

তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি ওলিউজ্জামান বলেন, খাদ্য গুদামে সরবরাহকৃত চাউলের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন দেয়ার পর এ ঘটনার সাথে জতিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *