বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় প্রকৌশলীকে পেটানো আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
প্রকৌশলীকে পেটানোয় উপজেলার সব সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কলম বিরতি পালন করেন।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অফিস থেকে হাবাসপুর এলাকায় ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০০ মিটার সাব-বেইজ রাস্তা নির্মাণ কাজের বরাদ্দ পায় রাজশাহীর মমো এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পরবর্তীকালে এই কাজটি ক্রয় করে নির্মাণ কাজ শুরু করেন স্থানীয় ঠিকাদার ও বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকার। এ কাজটি দেখভাল করেন ঠিকাদারের বড় ছেলে সেলিম আহাম্মেদ সরকার।
এ রাস্তাটি নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে বলে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার সকালে উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদ আহাম্মেদ ঘটনাস্থলে তদন্তে যান। সেখানে মিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে-তা প্রমাণ পেয়ে সংশ্লিষ্টদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে অফিসে চলে আসেন তিনি।
পরে স্থানীয় ঠিকাদার ও বাঘা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস সরকারের বড় ছেলে সেলিম আহাম্মেদ সরকার ওই প্রকৌশলীকে চড়-থাপ্পড় মেরে এবং অফিস কক্ষের মধ্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদ আহাম্মেদ বলেন, সেলিম আহাম্মেদ অফিসে এসে কাজ বন্ধ রাখার কারণ জানতে চেয়ে অকথ্য ভাষায় কথাবার্তা বলে এবং আমাকে মারপিট করে ধাক্কা দিয়ে চেয়ার থেকে ফেলে দেন। এ সময় অন্য সহকর্মীরা এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করেন।
এ বিষয়ে সেলিম আহাম্মেদ বলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারপিট করা হয়নি। কেন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছিলাম। তবে তাকে রাগ করে একটা ধাক্কা দিয়েছিলাম।
বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে সেলিম আহাম্মেদকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, আইনিভাবে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। এ সময় ঠিকাদারের ছেলে ওই উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে তার অফিসে রোববার দুপুর ১২টার দিকে মারপিট করে। সূত্র: যুগান্তর।
স্ব.বা/শা