নাটোর প্রতিনিধিঃ নাটোরের বাগাতিপাড়া সংলগ্ন লালপুর উপজেলার ধুপইল শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে নবনির্মিত ৭১মঞ্চে চলন নাটুয়া’র ৫দিন ব্যাপী যাত্রা উৎসবের দ্বিতীয় রাতে যাত্রাপালা ‘জেল থেকে বলছি’ মঞ্চস্থ হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে যাত্রাপালাটি মঞ্চস্থ হয়। বিশেষ করে তিন শতাধিক নারী দর্শকের আগ্রহ উচ্চ্বাস চোখে পড়ার মতো ছিল।
যাত্রা পালার কাহিনিতে দেখা মেলে একটি মধ্যবিত্ত সংসারের উত্থান-পতনের সকরুণ কাহিনি ‘জেল থেকে বলছি’। ছোটো ভাই উত্তম ও তার বৌকে সুখী করার জন্য বড়ভাই গৌতম ও স্ত্রীর চরম আত্মত্যাগ দর্শককে কাঁদিয়েছে। উত্তম-পারুলের প্রেমের অবৈধ সন্তানকে কোলে নিয়ে কুমারী মায়ের কষ্ট সহিষ্ণুতা এই নাটকের মূলসুর।
বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করেছেন, নুর ইসলাম, দুলাল চৌধুরী, আব্দুল হক, বেল্লাল, জয়নাল, ছালাম, ডাক্তার মিঠু, আলাউদ্দিন, হেলাল, বজলু মোল্লা, শিশুশিল্পী দিয়া, খালেক, আরতী, লিপি, আসমা, কেয়া, জাহিদুল আরও অনেকে। পালাটি পরিচালনা করেন আব্দুর রাজ্জাক।
প্রতিবেশির অনুরোধে যাত্রা দেখতে আসা একজন শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যাত্রা যে নারীরাও দেখতে পারে তা ভাবতেই পারিনি। মোবাইল সংস্কৃতির বাইরেও যে ভালো বিনোদন থাকতে পারে- এটা তারই উদাহরণ।
৫দিন ব্যাপী যাত্রা উৎসবের আয়োজক ও চলন নাটুয়ার সভাপতি বলেন, দর্শকের যেসাড়া পেয়েছি, তাতে ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে উৎসব আয়োজন করার আগ্রহবোধ করছি।
৭১ মঞ্চ নির্মাণের উদ্যোক্তা উৎসবের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অপসংস্কৃতির হাত থেকে বর্তমান সমাজকে সুস্থধারায় ফিরিয়ে আনতে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা চালিয়ে যাবো। কারণ দেশটা তো আমার। আমার দেশকে আমাকেই রক্ষা করতে হবে।
যাত্রা নির্দেশক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি আনন্দিত, আমি রোমাঞ্চিত। ১০বছর পর পূর্বে অশ্লীলতার কারণে যে যাত্রা ছেড়ে দিয়েছিলাম, চলন নাটুয়ার আন্দোলন দেখে মুগ্ধ হয়ে আবার শুরু করলাম। দর্শকের সাড়া পেয়ে যাত্রাপালা পরিবেশনে ব্যাপক আগ্রহবোধ করছি।
এককালের যাত্রাশিল্পী আজগর আলী বলেন, যাত্রা দেখে অতীতে ফিরে গেয়েছিলাম। নষ্টামী না করে যে যাত্রা দেখলাম তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আয়োজকার জানান, ৫দিন ব্যাপী যাত্রা
উৎসবের তৃতীয় রাত আজ রবিবার মঞ্চায়ন হবে বকুল স্মৃতি থিয়েটারে ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘পরাজিত সম্রাট’। পরদিন সোমবার রাতে পরিবেশিত হবে চলন নাটুয়ার ‘বিজয় বসন্ত’ যাত্রাপালা।
স্ব.বা/শা