ত্রানের ফেরিওয়ালা মেয়র রাব্বানী

রাজশাহী
সারোয়ার হোসেন, তানোর: মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সারাদেশের মানুষ যখন ঘরবন্ধি। বিশেষ করে খেটে খাওয়া জনসাধারণ থেকে শুরু করে সব শ্রেণী পেশার মানুষ চরম আতঙ্কসহ এক প্রকার দুশ্চিন্তায় দিত পার করছেন । সারাদেশেরমত  বরেন্দ্র ভুমি হিসেবে কৃষি প্রধান এলাকা নামে পরিচিত রাজশাহীর তানোর উপজেলারও একই অবস্থা। বেশির ভাগ মানুষ দিন মজুর তাঁরা বা খেটে খাওয়া। তাঁরা এসময় করোনার চেয়ে পেটের ক্ষুধা দূর করতে কাতরাচ্ছেন বা আহাজারি খাদ্য সামগ্রীর জন্য । এসব মানুষের খাদ্যের আহাজারি কিছুটা মেটাতে উপজেলা আ”লীগ সভাপতি মু-ুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন তাদের দ্বারে দ্বারে। তাইতো এলাকাবাসী থেকে শুরু করে সকলেই বলছেন মহামারী এদুর্যোগের সময় মেয়র গোলাম রাব্বানী ত্রানের ফেরিওয়ালা হয়ে পড়েছেন।
নিজের অর্থ খরচ করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে দিয়েই যাচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী। মু-ুমালা পৌর এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় দরিদ্র ব্যক্তিদের মাঝে এপর্যন্ত তিনি ১৯ মেঃটন চাল দিয়েছেন, সাথে দেয়া হচ্ছে ডাল আলু নগদ অর্থও। পর্যায়ক্রমে তিনি পুরো উপজেলায় ৫০ মেঃ চালসহ নিত্যপন্য দিবেন বলে জানান। এজন্য চার পাঁচটি ইউনিয়নের দরিদ্র ব্যক্তিদের তালিকাও করেছেন।
জানা গেছে মহামারী করোনাভাইরাসের জন্য সরকার গত ২৬ মার্চ সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে ছুটি ঘোষণা করেন ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। যার ফলে চরম বিপাকে পড়ে খেটে খাওয়া বা দিন আনে দিন খায় এসব শ্রেণীর জনসাধারণ। ছুটির পর ২৮এপ্রিল থেকে মেয়র রাব্বানী, তাঁর একান্ত অনুসারী মু-ুমালা আ”লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান শুরু করেন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা। এছাড়াও মেয়র রাব্বানীর ভাই শরিফুলও শুরু করেন নিজ এলাকায় খাদ্য বিতরণের কার্যক্রম। যা এখনো চলমান রয়েছে।
মেয়র রাব্বানীর পরিবার প্রয়াত মাহাম পরিবার হিসেবে পরিচিত। তাঁরা শুধু এদুর্যোগে না প্রতি নিয়তই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাদের গ্রাম প্রকাশ নগর তাঁর আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণ নিজেদেরকে মাহাম পরিবারের সদস্য হিসেবেই মনে করেন। প্রয়াত মাহাম পাচন্দর ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁরা আ”লীগ পরিবার হিসেবেই পরিচিত। মাহাম চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র কিলিন ইমেজের রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত মু-ুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী। তাঁর চিন্তাধারা পিতা ও দাদার মত ।
ওই এলাকার জনসাধারণ জানান প্রয়াত মাহাম পরিবারে সকালে প্রকাশ নগরগ্রামসহ আশপাশের কয়েকশ মানুষ প্রতিদিন সকালে তাদের বাড়ির চা বিস্কুট খেয়ে অন্য কাজে যান। এনিয়ম দীর্ঘ কয়েক যুগের । কারন মেয়র রাব্বানীর দাদা ছিলেন বৃটিশ শাসন আমলের পঞ্চায়েত। তাকে সবাই কবির পঞ্চায়েত হিসেবেই যানে। সেই আমল থেকে তাঁরা অসহায় মানুষদের দেখভাল করে থাকেন। যখন এসব এলাকা মাত্র একবার ফসল হত। কার্তিক মাসে শুরু হত মহামারী। ওই সময় হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়ি থেকে ধান চাল টাকা নিয়ে গেছে। কেউ ফেরত দিয়েছে আবার কেউ ফেরত দেয় নি। যার কারনে মেয়র রাব্বানীর এক ডাকে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত।
খোজ নিয়ে জানা গেছে বিশ্ব এখন ভয়াবহ করোনার ছোবলে দিশেহারা। বিভিন্ন দেশে প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ এভাইরাসে মারা যাচ্ছে। যদিও বাংলাদেশে এর হার অনেক কম। গত রোববার দেশে ১৮জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। সামাজিক দুরুত্ব বজায় রাখতে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রশাসনের লোকজনরা। এতে করে দিন মজুর খেটে খাওয়া অসহায় অচ্ছল ব্যক্তিরা যখন খাবারের জন্য চাতক পাখির মত চেয়ে আছেন , ঠিক সেই সময় ফেরিওয়ালার মত মেয়র রাব্বানী খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন।
মেয়র রাব্বানী উপজেলা আ”লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও সাংসদ ফারুক চৌধুরী নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রায় চার বছর ধরে তাকে দূরে রেখে সাংসদের বংশীয় বাবু চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নামে দায়িত্ব দিয়ে সকল ধরনের কার্যক্রম করে নিচ্ছেন তাঁর ভাতিজা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাকে দিয়ে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই মেয়র রাব্বানীর কার্যক্রম।
মেয়র রাব্বানী জানান এই মহামারী দুর্যোগের সময় অসহায় দিন মজুর মানুষের পাশে দাড়িয়ে তাদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। আমার পৌর এলাকায় ১ থেকে ৯ ওয়ার্ডের প্রায় দরিদ্র পরিবারের বাড়িতে সাত দিনের খাবার দিয়েছেন মু-ুমালা আ”লীগের সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান। আমি নিজ গ্রামসহ আশপাশের অনেকগ্রামে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছি। এপর্যন্ত কত পরিবারের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন জানতে চাইলে তিনি জানান কত পরিবার সেটা হিসেব নেই, কিন্তু এপর্যন্ত ১৯ মেঃটন চাল দিয়েছি। সাথে দেয়া হয়েছে আলু ডাল ও মসলা কেনার জন্য কিছু নগদ অর্থ।
তিনি আরো জানান দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে দলীয় সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে নিজের অর্থ খরচ করে দরিদ্র ব্যক্তিদের মাঝে সাধ্য মোতাবেক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খাবার পৌছে দিচ্ছে। এক দুই দিনের মধ্যে পুরো উপজেলায় নিজ অর্থায়নে ৫০ মেঃটন চাল দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রয়োজনে আরো লাগলে দেয়া হবে। রাজনীতি করি মানুষের সেবা করার জন্য, লুটপাট করার জন্য না। আমার বাপ দাদারা সব সময় দরিদ্র মানুষের পাশে ছিলেন এবং আমাকেই সাধ্য মোতাবেক দরিদ্র ব্যক্তিদের সেবা করার কথা বলে গেছেন। আমরা মানুষকে দিতে যানি, নিতে জানিনা। আর তাঁরা মানুষের কাছ থেকে নিতে যানে দিতে জানেনা।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *