বাঘায় ফেন্সিডিলসহ মোটরসাইকেল জব্দ করে সেগুলো গোপনে বিক্রি করলো থানার এসআই

রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘা থানার এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে ফেনসিডিলসহ মোটরসাইকেল জব্দ করে সেটি গোপনে বিক্রির পাশাপাশি ওই মাদক কারবারিকে আটক করার পর ছেড়ে দিয়ে তার মোটরসাইকেল কেনার অভিযোগ উঠেছে। রয়েছে আরো অনেক অভিযোগ। সেই এসআইয়ের নাম সইবুর রহমান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাঘা উপজেলার আলাইপুর সীমান্ত থেকে ১০ পিস ইয়াবা এবং একটি ১০০ সিসি হিরো হোন্ডাসহ (নম্বর রাজশাহী-ল ১১-১২৭৮) ওই গ্রামের খাকছারের ছেলে মিজান (৪০) এবং পাশের চারঘাট উপজেলার জোত কার্তিক গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে বাদশাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেন এসআই সইবুর রহমান। এ নিয়ে ওই দিন রাতেই থানায় মামলা হয়।

কিন্তু মামলায় আলামত হিসেবে জব্দ করা মোটরসাইকেলটির কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে ঘটনার এক দিন পর অর্থের বিনিময়ে আসামি মিজানের পরিবারের কাছেই সেই মোটরসাইকেল বিক্রি করে দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, গত ২৩ মার্চ উপজেলার বানিয়াপাড়া পাকা রাস্তায় এসআই সইবুর রহমান অটোরিকশা থেকে চকরাজাপুর এলাকার চোরাকারবারি সুজনকে (৩৫) এক ব্যাগ ফেনসিডিলসহ আটক করে নারায়ণপুর এলাকায় নিয়ে যান। এরপর একই দিন এক কার্টন ফেনসিডিলসহ আটক করা হয় আব্দুর রউফ ও আবুল কালামকে।

এর আগে গত ৪ জানুয়ারি রাতে উপজেলার মালিয়ানদাহ এলাকায় ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করা হয় ওই গ্রামের রান্টুকে (৩০)। প্রকৃতপক্ষে ওই ফেনসিডিলের মালিক মেরাজ উদ্দিন। কিন্তু এ মামলায় মেরাজকে আসামি করা হয়নি। উল্টো এক লাখ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে মেরাজকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে রান্টুকে মাত্র ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এসআই সইবুর রহমান এ থানায় যোগদানের পর উপজেলার পানিকমড়া এলাকায় বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ রনি আহাম্মেদ নামের এক মাদক কারবারিকে আটক করেন। পরে মামলা না দিয়ে তার ব্যবহৃত অ্যাপাচি মোটরসাইকেলটি কিনে নেন এসআই সইবুর রহমান।

তা ছাড়া উপজেলার আলাইপুর গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে ইব্রাহিমের নামে মাদক মামলায় দুই বছরের সাজা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি এসআই সইবুর রহমানের সোর্স হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের তোফায়েল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি ওই এলাকার মেদ্দারফা নামের এক ব্যক্তিকে মাদকসহ আটক করেন এসআই সইবুর। কিন্তু ওই মামলায় তোফায়েলকে আসামি করার হুমকি দিয়ে ৩৫ হাজার টাক দাবি করেন। পরে ৩০ হাজার টাকা দিতে হয় সইবুরকে।

তা ছাড়া মাইক্রোবাস মালিকদের কাছ থেকেও এসআই সইবুর নিয়মিত মাসোহারা আদায় করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই সইবুর রহমান দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তবে মিজানের মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দেওয়া হলেও কোনো অর্থ নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া মাদক কারবারিকে ছেড়ে দিয়ে মোটরসাইকেল কেনার বিষয়টিও ঠিক নয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র: কালের কণ্ঠ।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *