নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে টেন্ডারবাজির অভিযোগ

রাজশাহী লীড
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলে টেন্ডারবাজির মাধ্যমে প্রায় ৭০ লাখ টাকার কাজ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শর্তানুযায়ী দরপত্র গ্রহণের পর লটারি না করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিজস্ব লোকদের মধ্যে কাজগুলি ভাগবাটোয়ারা করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন খোদ লালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আফতাব হোসে ঝুলফু।
উপজেলা চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, কয়েকজন ঠিকাদার তার কাছে অভিযোগ করেছেন, চিনিকলের কয়েকটি রাস্তা ও পুরাতন ভবন সংস্কারের জন্য কয়েকটি গ্রুপে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয় বরাদ্দের দরপত্রে অংশ নেন। শর্ত অনুযায়ী দরপত্রে অংশ নেয়া ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে লটারি করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের দেয়া তালিকা অনুযায়ী তার নিজস্ব লোকদের মধ্যে গোপনে কাজগুলি বন্টন করে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এসবের প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার হয়নি। তিনি কার্যাদেশ বাতিল করে প্রকাশ্যে লটারির মাধমে ঠিকাদার নিবার্চিত করে কার্যাদেশ দেয়ার দাবী জানান।
এদিকে একই অভিযোগ করে লালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, তার কাছে মির্জা খোকন ও আবুল কাশেম সহ কয়েকজন ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন যে, একই দরে তারা দরপত্রের ৭টি গ্রুপেই অংশ নেন। শর্তানুযায়ী লটারির কথা থাকলেও গোপনে কাজগুলি ভাগবাটোয়া করা হয়েছে স্থানীয় এমপির নির্দেশে। এই চিনি কলে সম্প্রতি অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। তিনি পুনরায় টেন্ডার আহ্বানের দাবী জানান।
চিনিকলের প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম বলেন, বিধি ও শর্ত অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান ও দাখিল হয়। কোন অনিয়ম করা হয়নি। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী ও ১ ফেব্রুয়ারী দু’টি পত্রিকায় চিনিকলের সেবাখাতের রাস্তা ও জীর্ন ভবন উন্নয়নের ৭টি গ্রুপের দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। টেন্ডার দাখিলের দিন ধার্য ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারী। প্রায় ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দের এই কাজগুলি একই দরে প্রায় ২১ জন ঠিকাদার দরপত্র দাখিল করেন। ফলে লটারির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়েগ করা হয়। প্রায় ১৫ জন ঠিকাদারের উপস্থিতিতে লটারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যরা লটারি করার সময় আসতে না পারায় টেলিফোনের মাদ্যমে যোগাযোগ করছিলেন।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ঠিকাদার নিয়োগসহ কার্যাদেশ প্রদানে কোন ধরনের অনিয়ম করা হয়নি। সবার উপস্থিতিতে লটারি করা হয়েছে। অন্তত ১৫ জন ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন। যারা কাজ পাননি তাদের দু’একজন হয়ত আবেগের বশবর্তী হয়ে এধরনের অভিযোগ করছেন। যা মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের সাথে এবিষয়ে জানতে তার মোবাইফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, তিনি কোন টেন্ডারবাজির সাথে জড়িত নন। চিনিকল কর্তৃপক্ষ তাদের নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।তিনি করোনা মোকাবেলায় রাতদিন কাজ করে চলেছেন। ইতিপুর্বে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা সব সময় অনিয়মের মাধ্যমে সুবিধা নিয়েছেন। এখন অবৈধভাবে সুবিধা নিতে না পেরে এমন মিথ্যাচার করছেন। আমি আমার নিবার্চনী এলাকাকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। তাই সুবিধাভোগীরা এসব মিথ্যাচার করে সুবিধা আদায়ের পাঁয়তারা শুরু করেছেন।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *