রাজশাহী মহানগর আ’লীগের কমিটিতে রাবির দুই অধ্যাপক, বঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতারা

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে চলতি বছরের ১ মার্চ। এরপর করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে হয়নি পুর্ণাঙ্গ কমিটি। তবে কেন্দ্রের নির্দেশে গত ১৯ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই কমিটি এখন দলীয় প্রধানের অনুমোদনের অপেক্ষায়। সেই কমিটির একটি তালিকা গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদে জমা দেওয়া খসড়া কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন অধ্যাপককে।

তাঁরা হলেন- ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রণব পাণ্ডে। অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আর অধ্যাপক ড. প্রণব পাণ্ডে রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ পেতে যাওয়া এ দু’জন অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সিনিয়র সদস্য।

ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনে মূল নেতৃত্বে ছিলেন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে দলকে সুসংগঠিত করছেন এমন কাউকে এবার কমিটিতে রাখা হয় নি বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মূল পদের বাইরে সহ-সভাপতি, যুগ্ম-সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ গুরুত্ববহন করে। এসব পদে নেতৃত্বকে বিকশিত ও পরীক্ষিত নেতৃত্বকে সম্মানিত করা হয়। পদগুলোতে নেতৃত্ব দাবি করতে পারেন এমন কাউকে রাখা হয়নি। মূল নেতৃত্বের মধ্যে শুধুমাত্র মহানগর সভাপতির আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাইমুল হুদা রানাকে দ্বিতীয় বারের মতো যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছে।

নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় নামা অপর দুই নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক উপেক্ষিত হয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুর্দিনের সাবেক আহ্বায়ক কামরুজ্জামান চঞ্চল গত মহানগর আওয়ামী লীগের জায়গা না পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। এবার তিনি জেলা ও মহানগর দুই প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। এমনকি মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রাকসুর সাবেক এজিএস মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমানের নামটিও প্রস্তাবিত কমিটিতে ঠাঁই পায়নি।

আওয়ামী লীগ নেতা আহসানুল হক পিন্টু রাবি ছাত্রলীগে যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সে কমিটির সভাপতি বর্তমানে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনে মূল নেতৃত্বে ছিলেন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে দলকে সুসংগঠিত করছেন এমন কাউকে এবার কমিটিতে রাখা হয় নি বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এবিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক কামরুজ্জামান চঞ্চল বলেন, ‘২০০১ সালের পর যখন সারা বাংলাদেশে ছাত্রলীগ দাড়াতে পারছিলনা তখন আমাকে রাবি ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আর আজ আমাদের মত যারা জীবন বাজি রেখে দলীয় কার্যক্রম করেছিল তারা আজ পদ- পদবী থেকে উপেক্ষিত। তারপরেও বলতে চাই আমরা বঙ্গবন্ধুর অনুসারী জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী দলের দু:সময়ে আবারো আমরাই দাড়াবো।’

প্রস্তাবিত কমিটিতেও সহ-সভাপতি আছেন শাহীন আকতার রেণী, মীর ইকবাল, মোহাম্মদ আলী কামাল, মাহফুজুল আলম লোটন, মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, রেজাউল ইসলাম বাবুল, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, অধ্যাপক প্রণব পাণ্ডে। আগের কমিটিতে যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ছিলেন রেজাউল ইসলাম বাবুল।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, নাঈমুল হুদা রানা। আসাদুজ্জামান আজাদ বিগত কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন এবিএম হাবিবুল্লাহ ডলার। সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার, বদিউজ্জামান খায়ের ও মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন। আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোসাব্বিরুল ইসলাম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, দফতর সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম বুলবুল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, প্রচার সম্পাদক দীলিপ ঘোষ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শ্যাম দত্ত, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সফিকুর রহমান রাজা, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এএসএম ওমর শরীফ রাজিব, শ্রম সম্পাদক আবদুস সোহেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কামারুল্লাহ সরকার কামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফ.ম.আ জাহিদ, উপ-দফতর সম্পাদক পঙ্কজ কুমার দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম।

সদস্য হিসেবে যাদের নাম আছে তারা হলেন, অ্যাডভোকেট মোজাফ্ফর হোসেন, নফিকুল ইসলাম সেল্টু, নিঘাত পারভীন, আরিফা বেগম, জহির উদ্দিন তেতু, শামসুজ্জামান আওয়াল, আজিজুল আলম বেন্টু, মুশফিকুর রহমান হাসনাত, নজরুল ইসলাম তোতা, হাবিবুর রহমান বাবু, এনামুল হক কলিন্স, মো. শাহাবুদ্দিন, আশরাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট শামসুন্নাহার মুক্তি, ডা. আবদুল মান্নান, আতিকুর রহমান কালু, হাফিজুর রহমান বাবু, আখতারুল আলম, আবদুস সালাম, কল্পনা রায়, কানিজ ফাতেমা কেয়া, অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খাতুন, তোজাম্মেল হক বাবলু, মমতাজ উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, আলেমুল হাসান সজল, জয়নুল আবেদীন চাঁদ, ইউনুস আলী, খায়রুল ইসলাম শাহীন, মকলেসুর রহমান কচি, অ্যাডভোকেট রাশেদ-উন-নবী আহসান, মাসুদ আহম্মেদ, কেএম জুয়েল জামান ও আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি বিতর্কমুক্ত একটা কমিটি দিতে। মূলত দলের জন্য যারা কাজ করবেন, তারাই নেতৃত্বের সুযোগ পাবেন। সূত্র: সাহেববাজার২৪.কম।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *