রাজশাহীতে এক পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল (ভিডিওসহ)

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে এক পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হারুনুর রশীদকে প্রকাশ্যে ঘুষ নিতে দেখা যায়। বুধবার (২ ডিসেম্বর) ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এর পরপরই তাকে ওই পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে টাকা গুণে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার সিসিটিভির ওই ফুটেজ থেকে করা ভিডিওটি করোনার শুরুতে লকডাউন সময়ের বলে জানা গেছে।

লকডাউনের সময় দোকানপাট খুললেই এএসআই হারুনকে ঘুষ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এএসআই হারুণ অবশ্য এ নিয়ে এখন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, করোনাকালে লকডাউনের সময় তাহেরপুর বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এএসআই হারুন। সিগারেট মুখে সে দোকানদারের সঙ্গে দরকষাকষির পর দুই হাজার টাকা ঠিক হয়। পরে টাকা গুণে দেখে তিনি আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। পরে পুরো টাকা নিয়েই তিনি চলে যান।

এদিকে, এএসআই হারুনকে তাহেরপুর ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের পর তার অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। এএসআই হারুনের চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, আটক বাণিজ্য ও মাদক বাণিজ্যে তার সম্পৃক্ততার অনেক কাহিনী এখন বের হয়ে আসতে শুরু করেছে।

স্থানীয়রা জানান, লকডাউনের সময়ে বাগমারার সাজুড়িয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লেদ আজাদকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ আটক করে এএসআই হারুন মোটা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন।

এছাড়া উপজেলার রামরামা হাজরাপুকুর গ্রামের সুবদের ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী সনাতন দাসকে মাদকসহ আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন এবং জব্দ করা গাঁজা এএসআই হারুন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেন।

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করছেন যে, তাহেরপুরের পাশ্ববর্তী পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের ইমন নামে এক ছাত্রকে ১০টি ইয়াবা দিয়ে সাজানো মামলায় আদালতে চালান করেন হারুন।

ভুক্তভোগী ইমনের পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে প্রতিপক্ষ এএসআই হারুনকে টাকা দিয়ে এ কাজ করান।

অভিযোগ রয়েছে, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা গ্রামের একজন সরকারি চাকরিজীবীকে এক নারীর ঘরে ঢুকিয়ে ধর্ষণ মামলা দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা আদায় করেন এএসআই হারুন।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, এএসআই হারুণের মূল কাজই ছিল দোকানে দোকানে চাঁদা তোলা ও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায়।

জানতে চাইলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। ঘটনা যাই থাকুক, প্রাথমিক তদন্তে তাদের মনে হয়েছে- এএসআই হারুন কাজটা ঠিক করেননি। তাই তাকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে সত্যতা মিললে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান- রাজশাহী পুলিশ সুপার।

 

স্ব:বা/ না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *