চাচাদের ষড়যন্ত্র ও নির্যাতন থেকে মুক্তি চান এডভোকেট বিউটি

রাজশাহী
নাটোর প্রতিনিধি: আপন চাচা-চাচীদের নির্যাতনে দিশেহারা নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার চিথলিয়া এলাকার বাসিন্দা ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট বিউটি আক্তার।তিনি ওই গ্রামের আবেদ আলী মোল্লার মেয়ে।এডভোকেট বিউটি আক্তার জানান, তার বাবা চট্রগ্রাম শিপইয়ার্ডে চাকুরী করতেন। কিন্তু তারা বাস করতেন নাটোরের নিজ বাড়িতে।দুই ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই বড়। ছোট ভাই বর্তমানে প্রবাস জীবনে।
তিনি অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, বাবার চাকুরী করা সুবাদে সুখী জীবন-যাপনই কাল হয়ে দাঁড়ায় আপন তিন চাচাদের পরিবারে। তারা নানা ভাবে তাদের শত্রুতার পরিকল্পনা করতে থাকে। এরই অংশ হিসেবে তাদের বাড়ির কাজের মেয়েকে হাত করে চাচারা তার বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠায়, যখন তার বয়স ছিল মাত্র ৯-১০ বছর। এরপর তাকে জোর করে তার চেয়ে ৪ গুণ বেশি বয়সের এক বৃদ্ধের সাথে বিয়ে দেয়। এসময় তার চাচী আনেকা বেগম তাকে কোলে মধ্যে চেপে ধরে কবুল পড়তে বাধ্য করে। এরপর চার বছর ধরে তার ওপর চলে নানা শারিরীক নির্যাতন। এক পর্যায়ে স্বামীর নির্যাতনে তাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। বাবা জেল থেকে ফিরে তাকে তার নানার বাড়িতে পাঠায়। স্বামীকে তালাক দিয়ে সে আবার পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়। তিনি সর্বশেষ চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর কানাডা মনট্রিল কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ইন ল ইকুইটি সম্পন্ন করে বর্তমানে ঢাকার সুপ্রিমকোর্টে আইন প্র্যাকটিস করছেন।
 তিনি আরো বলেন, বাবা সম্প্রতি সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। ইতোমধ্যে তিন চাচা জাবেদ, ওয়াহেদ, ছাবেদ ও তিন চাচী  ষড়যন্ত্র করে তার দাদার প্রায় ২০ বিঘা জায়গা নিজেদের নামে লিখে নেয়৷ বর্তমানে এজমালে এক পুকুরে তার বাবার ২ কাঠা ও বাড়িতে কেনাসহ পৌনে বারো শতক জমি রয়েছে। সেই জমিতে বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে চাচারা ষড়যন্ত্র শুরু করে। তার বাড়ি নির্মাণ সামগ্রী লুট করে থাকার ঘরের বিভিন্নস্থানে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলে।
এব্যাপারে তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হলেও শরীকরা নানাভাবে হুমকি-ধামকী দিচ্ছেন। শনিবার স্থানীয় ব্যাক্তিরা ওই জমি মাপ-জোখের চেষ্টা করলেও বাড়ির পরিবর্তে তাদেরকে বিলের জায়গা দিতে চায় চাচারা। এতে রাজি না হওয়ায় আবারও তাদের ওপর নেমে এসেছে হুমকি।বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জাবেদ ও ওয়াহেদ মোল্লা জানান, এটা তাদের পারিবারিক বিরোধ। ভাস্তির ওপর কোন নির্যাতন করা হয়নি। বরং জমির সীমানা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা চলছে।
 স্থানীয় প্রধান নেকবর জানান, শনিবার সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মাপা হয়েছে। যেটুকু সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।এডভোকেট বিউটি দাবী করেন, চাচাদের দীর্ঘ নির্যাতনের ইতি চান তারা। চান বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আর দশজনের মতো শান্তিতে বসবাস করতে। তিনি এব্যাপারে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *