গোদাগাড়ীতে বালু পরিবহনে বাধা

রাজশাহী লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বৈধ বালুমহাল থেকে বালু পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে জেলা প্রশাসনের বালুমহার থেকে বালু পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলেও পুলিশ আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

গোদাগাড়ীর সারাংপুর এলাকার পদ্মার ছয় মৌজার বালুমহাল প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকায় জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেয় জাহাঙ্গীর আলম। ইজারার নেয়ার পর জামায়াতের মোড় এলাকা থেকে বালু পরিবহন করে আসছিলেন তিনি। তবে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে তার বালু পরিবহনের ট্রাক তৈমুরের মোড় থেকে ফিরিয়ে দেয় কথিত ট্রাকের ট্রোল আদায়কারি শামিম আকতার রুমেন বাহিনী। ফলে গত কয়েকদিন ধরে এই বালুমহালের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন ইজারাদার।

বালুমহাল ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রুমেন ও তার বাহিনীর সদস্যরা সারাক্ষণ তৈমুরের মোড়ে অবস্থা করছে। আমার কোন ট্রাক গেলে সেখান থেকে ফিরেয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘাটে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও পুলিশ আইনগত কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

জাহাঙ্গীর বলেন, আমার বালু পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হলেও একই এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহন অব্যাহত রয়েছে। এই অবৈধ বালুকারবারের সঙ্গে রুমেন ও তার পিতা আনারুল বিশ্বাস জড়িত রয়েছে। নিয়মিত তারা বালু পরিবহন করছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে, রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীর একটি বালুমহাল লিজ নিয়ে গোদাগাড়ী সারাংপুর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করে আসছেন মনির হোসেন বকুল নামের এক বিএনপি নেতা। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় অবৈধ বালু উত্তোলনের পাশাপাশি নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বৈধ ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম ও তাল লোকজনকে। বিএনপি নেতা মনির হোসেন বকুলের অবৈধ বালুকারবারে পার্টনার রয়েছেন গোদাগাড়ীর ‘রুমেন বাহিনী’র প্রধান শামিম আকতার রুমেন।

জানা গেছে, রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে গোদাগাড়ীর দুইটি বালুমহাল লিজ নেন জাহাঙ্গীর আলম ও মনোয়ারুল হোসেন। লিজ গ্রহণের শর্তানুযায়ী গত পহেলা বৈশাখ থেকে বালুমহাল দুটি থেকে বালু উত্তোলন করার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু করোনার সুযোগ নিয়ে প্রায় দুই মাস বালুমহাল দুটি দখল করে রাখেন বকুল হোসেন। ফলে পহেলা বৈশাখ থেকে বালু উত্তোলন করতে পারেননি ইজারাদাররা। পরে বালু উত্তোলন করতে গেলে বাধা দেয় বকুলের ‘রুমেন বাহিনী’র লোকজন।

বিষয়টি সুরাহার জন্য উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেন জাহাঙ্গীর আলম ও মনোয়ারুল হোসেন। গত ৯ নভেম্বর বিষয়টিতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন অবৈধবালু উত্তোলণ ও পরিবহনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *