নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায়  মিরাট ইউনিয়নে অবৈধ ভাবে জমি দখলের চেষ্টা

রাজশাহী

নওগাঁ সংবাদদাতাঃ নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নে অবৈধভাবে অনধিকার প্রবেশ করে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বলে জানা যায়।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, জমিটির আর.এস. রেকর্ডের মালিক ছিলেন কফিল উদ্দিন ও মোয়াজ্জেম হোসেন। জমিটি বর্গা হিসাবে ২৫ বছর ধরে চাষাবাদ করতেন বান্দাইখাড়া গ্রামের জাহার আলীর ছেলে মোঃ আবু বক্কর সিদ্দীক। মৌজাঃ আয়াপুর, আর.এস. খতিয়ান নংঃ ৫৬/৫৭, দাগঃ ৭২৮/৭২৯ প্রতি বছরের মত এবারও বর্গা হিসাবে জমিটিতে আলু রোপন করেন। বর্গাদার হিসাবে আবু বক্কর সিদ্দীক গত ১৪ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় আয়াপুর আলুর জমি দেখতে গেলে, দেখতে পান যে, বন্দাইখাড়া গ্রামের সফিরউদ্দীনের ছেলে মোঃ নাজমুল হক (নয়ন), সফিরউদ্দীন এর স্ত্রী মোছাঃ রেনুকা বিবি, কছিমুদ্দীনের ছেলে মোঃ সফিরউদ্দীন ও হাটুরিয়া গ্রামের সাজামালের স্ত্রী মোছাঃ জোসনা, মেয়ে সেতু এবং বাগান্না গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোঃ আরাফাত হোসেন সহঃ অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন আয়াপুর আলুর জমিতে আলুর গাছ তুলে ফেলছে।

আবু বক্কর সিদ্দীক বাধা দিলে তার কোন কথার কর্ণপাত না করে আলুর গাছ তুলতে থাকে। তখন মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ওয়ারিশ ছেলে মোঃ বেলায়েত হোসেন (সিন্ধু) কে খবর দিলে বেলায়েত হোসেন জমিতে আসেন। বেলায়েত হোসেন কে দেখতে পেয়ে আবু বক্কর সিদ্দীক সহ বেলায়েত হোসেন সিন্ধুকে মেরে ফেলার জন্য নাজমুল হুকুম দেয় বলে জানা যায়। তখন রেনুকার তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে আবু বক্কর সিদ্দীকের মাথায় কোপ মারে। আবু বক্কর সিদ্দীক কোপটি ঠেকাতে গেলে বাম হাতে বৃদ্ধা আঙ্গুলের নীচে কেটে যায়। এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য নাজমুলের বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন আয়াপুরে আমার আলু লাগানো জমিতে গিয়ে দেখতে পাই যে, পূর্ব হতেই নাজমুল, রেনুকা, সফিরউদ্দীন, জোসনা, সেতু, আরাফাত আরও নাম না জানা ১০/১৫ জন ব্যক্তি আমার জমিতে দেশী অস্ত্র¿ সহ অবস্থান করিছিল এবং আমার জমিতে লাগানো আলুর গাছ তুলে ফেলছিল। আমি তাদের এই অন্যায় কাজ বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করলে তারা আমার কথার কোন গুরুত্ব না দিয়ে আলুর গাছ তোলা অব্যাহত রাখে। আমি তখন জমির মালিক মোঃ বেলায়েত হোসেন সিন্ধুকে খরব দেই এবং বেলায়েত হোসেন জমিতে আসেন। তখন নাজমুল বেলায়েত হোসেন কে দেখতে পেয়ে আমাকে গালাগালি দিতে থাকে এবং তার সাথে থাকা লোকদের আমাকে এবং বেলায়েত হোসেন সিন্ধুকে মেরে ফেলতে বলে। নাজমুলের নির্দেশে তখন রেনুকার তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে আমার মাথায় কোপ মারে। কোপ ঠেকাতে গেলে আমার বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলের নীচে কেটে যায়। এরপর আসামীরা সবাই মিলে আমাকে এলোপাতাড়ি ভাবে লাথি, কিল, ঘুষি মেরে মারাত্বক ভাবে যখম করে এবং আমি মাটিতে পড়ে গেলে নাজমুল ও আরাফাত আমাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করার চেষ্টা করে।

বেলায়েত হোসেন সিন্ধুর কাছে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন জমিটি আমার বাবার নামে রেকর্ড আছে। আমরা বর্গাদার হিসাবে আবু বক্কর সিদ্দীক কে দিয়েছি। তিনি ২৫ বছর ধরে চাষাবাদ করছেন। আমি বাদী হয়ে রাণীনগর থানায় এজাহার দিয়েছি।

এই ঘটনার বিষয়ে রাণীনগর থানার ওসির নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, ঘটনাটি সত্য এবং মোঃ বেলায়েত হোসেন সিন্ধু বাদী হয়ে ০৬ (ছয়) জন ব্যক্তিকে মূল আসামী করে অজ্ঞাত নামা ১০/১৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ১৮ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে থানায় একটি এজাহার দ্বায়ের করেছেন। রাণীনগর থানায় যার মামলা নম্বর ১৪/২১।

আসামীগণ গ্রেফতার হয়েছে কি না? এই বিষয়ে রাণীনগর থানার ওসির নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান এর নিকট আসামীদের গ্রেফতারের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামীরা আত্রাই ও বাগমারা থানার বাসিন্দা হওয়ার কারণে বর্তমানে কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বর্তমানে এই ঘটনাটি ঘটার পর এলাকায় থম থমে পরিবেশ বিরাজ করছে। যে কোন সময় আইন শৃঙ্খলার অবনতী ঘটতে পারে।

বাদী বলেন বর্তমানেও আসামীগণ মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে ও বর্গাদারকে প্রাণ নাশের হুমকি ধামকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। বাদী প্রশাসনের নিকট তার পরিবার সহ তার বর্গাদারের পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন এবং অনতি বিলম্বে সকল আসামীদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *