বাঘায় প্রতিপক্ষের হাতুড়ি পেটায় ভাঙা পা নিয়ে হাসাপাতলে যুবলীগ নেতা, মামলায় গ্রেফতার-৩

রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর আড়ানি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা আজিবর রহমানকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে জখম ও পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় আড়ানির পৌর মেয়র মুক্তার আলীকে হুকুমদাতা হিসেবে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন আহতের স্ত্রী মোসাঃ নাজমা রহমান । বুধবার (১০-০২-২০২১) রাত ১২ টার পর মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ। এ মামলায় ওই রাতেই তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 

তারা হলেন- ভারতী পাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে গাজী(৪০),একই গ্রামের আফতারের ছেলে সজিব হোসেন (৩৫) ও আব্দুল খলিলের ছেলে ভোলা (৩৬) । মামলার অন্য আসামীরা হলেন-পৌর মেয়র মুক্তার আলী,মমিনপুর গ্রামের সুজন আালী(৩৫), সাহাপুর গ্রামের রাজন (৩২) আড়ানি ষ্টেশনপাড়ার হিমেল (৩০), ভারতীপাড়ার জনি সরকার(৩৬), শফিকুল ইসলাম(৩২), পাঁচপাপাড়ার মাহাবুর রহমান (৪০), চক সিংগা গ্রামের মোঃ অংকুর(৩৮)।

অভিযোগে জানা যায়, পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা আজিবর রহমান ‘ইথিক্যাল ড্রাগস’ কোম্পানীতে চাকরি করেন। সেই সুবাদে গত মঙ্গলবার ((০৯-০২-২০২১) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার ভারতীপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে আড়ানি বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আড়ানীর রুস্তমপুর সড়কের মোমিনপুর গোরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় তার পথরোধ করে মামলায় অভিযুক্ত সংঘবদ্ধ দলের লোকজন হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে যুবলীগ নেতা আজিবার রহমানকে। তাদের হাতুড়ি পেটায় ডান পায়ের হাড় ভেঙে যায় আজিবারের। তাঁকে উদ্ধার করে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর, সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে ভাঙা পা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন যুবলীগ নেতা আজিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তাঁর ছোট ভাই শিপন আলী।

ঘটনার কারন হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত আড়ানি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী শহীদুজ্জামানের পক্ষে ভোটের মাঠে কাজ করেন আজিবর রহমান। ‘নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন মেয়র মুক্তার আলী। সেই থেকেই মেয়র মুক্তারসহ তার লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিল। ঘটনাটি এর আগেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবগত করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

অন্যদিকে যুবলীগ নেতাকে পেটানো ছাড়াও মামলায় অভিযুক্ত কতিপয় লোকদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক মোবাইল ফোন ও দর্জির দোকান থেকে পরিধেয় কোর্ট নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়ভাবে। তবে ক্ষতিগ্রস্থরা বিষয়টি স্বিকার করলেও লিখিত কোন অভিযোগ করেননি তারা।
প্রসঙ্গত, ১৬ জানুয়ারী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ শহীদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মুক্তার আলী । এনিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন।

শহীদুজ্জামান দাবি করে বলেন, তার পক্ষে অবস্থান নেওয়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানোসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চাইছেননা। এ বিষয়ে দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন তিনি। অপরদিকে মেয়র মুক্তার আলী দাবি করে বলেন, আমার কোনো লোক কাউকে মারধর করেনি। তার বিপক্ষের প্রার্থীর লোকজন নিজেরাই মারাপিটসহ অপকর্ম করে আমার লোকজনের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এছাড়াও ঘটনার দিন আমি রাজশাহীতে ছিলাম। তারপরেও আমাকে আসামী করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি করেছেন দু’জনই।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি)তদন্ত আব্দুল বারী বলেন, দুস্কর্মের সাথে ঘটনা স্থলে না থেকেও সহযোগী থাকায় যে কেউ আসামী হতে পারে। বুধবার সকালে গ্রেফতার করা জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *