আ’লীগ বিরোধী কান্ডে যেতে পারে সভাপতি ও সম্পাদকের পদ

রাজশাহী
সারোয়ার হোসেন, রাজশাহী: জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে সদ্য পৌরসভা নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্র করাই যেতে পারে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানীর সভাপতি পদ। এমনকি সভাপতির সাথে পদ হারাতে পারেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে উঠেছে আলোচনা সমালোচনার গুঞ্জন।
এতে করে প্রায় দুই যুগের পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের। জানা গেছে, গোলাম রাব্বানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়ে মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত করেন। এছাড়া মেয়র থাকা অবস্থায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরপর দুইবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মনোনয়ন না দিয়ে মনোনয়ন দেয়া হয় গোলাম রাব্বানীকে।
আর সেই দুই বার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট করেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। ফলে, আওয়ামী লীগের মধ্যে ডবল প্রার্থী হওয়ায় দুই বারই ফেল করেন আওয়ামী লীগ।  অথচ আজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইজন একসাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে প্রকাশে আওয়ামী লীগ বিরোধী কান্ড করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এইসব আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্র জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং সদ্য পৌরসভা নির্বাচনে ধরা পড়ে তৃণমূল  আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে।
সম্প্রতি, মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশে গোলাম রাব্বানী তার অনুগত সাইদুর রহমান কে দিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী করে  মাঠে ভোট করান। তার পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট না চেয়ে তার অনুগত বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য পৌরবাসীর কাছে ভোট চান তিনি। এমনকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট করতে আওয়ামী লীগ ছেড়ে ওয়াকার্স পার্টিতে যোগদান করে হাতুড়ি মার্কা নিয়ে সভাপতি গোলাম রাব্বানী তার ছোট ভাই শরিফুল ইসলামকে দিয়ে আওয়ামী বিরোধী ভোট করান।
এতে করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মিলেমিশে আওয়ামী লীগ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা ও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের শাস্তির দাবিতে উত্তাল ঢেউ। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাকে যত সম্মান দেয়া হয় তাই ততই মাথায় ওঠে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের যে সম্মান দেয়া হয়েছে তারা তার মর্যাদা রাখতে পারেনি। তারা যদি আওয়ামী লীগ করতেন, আওয়ামী লীগ কে ভালো বাসতেন তাহলে কখনোই আওয়ামী লীগ বিরোধী কার্যকলাপ করতেন না।
আসলে এরা দল করতে আসেনি। এরা এসেছে আওয়ামী লীগের ছত্র ছায়ায় থেকে নিজের আখের গোছাতে। এরা রাজনীতিকে পুঁজি করে ব্যবসা করতে এসেছে। এরা চেয়ারকে মনে করে নিজর বাপ দাদার সম্পত্তি। যে ভোট এলেই এদের চেয়ারের দরকার। এতে দল মনোনয়ন না দিলেও চেয়ার পাওয়ার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট করেন তাঁরা। এর প্রমাণ জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ এবং সদ্য পৌরসভা নির্বাচনে পাওয়া গেছে। তাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে উপজেলা আওয়ামী লীগের গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে কঠোর শাস্তি চেয়ে  তাদের পদপদবী থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থকরা।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *