তানোরে আলুর বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক

রাজশাহী
সারোয়ার হোসেন, তানোরঃ উত্তরবঙ্গের মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত রাজশাহীর তানোর উপজেলা। এই উপজেলাতে যেমন ধান চাষ হয় তেমন আলু চাষও হয়। এছাড়াও চৈতালি বিভিন্ন আবাদ বেগুন, মরিচ, পটল, টমেটো, ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার আবাদের জন্য উপযোগী তানোর উপজেলার মাটি। ফলে, আশপাশ উপজেলার বহিরাগত ব্যবসায়ীরা বিঘা প্রতি দশ থেকে বিশ হাজার টাকায় জমি টেন্ডার (লিজ) নিয়ে আলু চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের চৈতালী ফসল চাষ করেছেন। হঠাৎ করে দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য লক ডাউন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চড়া মূল্য বিক্রি হচ্ছে আলু আলুর দাম ভালো থাকায় এবার প্রায় কৃষক ঝুকি নিয়ে আলু চাষ করেছেন।
গত’বছরের চাইতে এ বছর আলুর বীজের দাম তিনগুণ বেশি হলেও আলু চাষ করতে পিছু তাকাই নি আলু চাষিরা। এবার আলু চাষের জন্যে প্রথম দিক থেকেই সহজে পাওয়া যাচ্ছিলো না ভালো মানের আলুর বীজ ও বাজারে সার। আলু চাষের জন্য সার নিয়ে দেখা দিয়েছিলো চরম সংকট। কোনো রকমে কৃষক আলুর বীজ পেয়েছেন তো সার পায়নি। আবার কেউ আলুর বীজ ও সার দুটোই সময় মত পায়নি। যার জন্য সার ও আলুর বীজ সংকট নিয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছিলো তানোর উপজেলার প্রান্তিক আলু চাষিরা। তানোর উপজেলার বিভিন্ন আলুর মাঠ ঘুরে দেখা গেছে , পুরোদমে মাঠজুড়ে চলছে আলু উত্তোলনের ধুম। আবার কেউ আলু উত্তোলনের জন্য জমি থেকে আলুর গাছ তুলছেন কেউ আলু উত্তোলনের পরে সেই জমিতে বোরো রোপনের জন্য জমি হালচাষ করে প্রস্তুত করছেন।
 প্রসিদ্ধ আলু চাষি আশরাফুল ইসলাম, নিশান, রাশেদুল ইসলাম বলেন, এবছর আলু রোপনের শুরু থেকেই ছিল বীজ ও সার সংকট চরমে। তার পরেও আলু চাষ হয়েছে ব্যাপক হারে, আলুর ফলনও হচ্ছে বাম্পার, প্রতি বিঘা জমিতে আলু হচ্ছে ৭০থেকে৭৫ বস্তা করে। বর্তমান বাজারে আলুর দাম ও চাহিদা রয়েছে সন্তোষ জনক। যদি এরকম বাজার থাকে তাহলে আলু চাষিরা ভালো লাভবান হবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর পৌর এলাকার বিভিন্ন কৃষক জানান, আলু রোপনের সময় আসলেই কৃষি অফিসের কিছু কতিপয় মুনাফা লোভী অসাধু কর্মকর্তার সাথে লিয়াজু করে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার সার ডিলাররা বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করে বরাদ্দের সার তানোরে না এনে গোডাউন থেকেই বেশি দামে সার বাহিরে বিক্রি করে দেয়া হয়। আবার আলুর বীজ ও সার পাওয়া গেলেও বস্তুা প্রতি গুনতে হয় ৪শ’থেকে ৬শ’টাকা করে বেশি। তবুও সময়মতো মিলেনা টিএসপি, ডিএপি,পটাশিয়াম সার। কিন্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এইসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। ফলে,আরো বেপরোয়া হয়ে পড়ে বীজ ও সার ডিলার সিন্ডিকেট চক্রটি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার তানোরে টিএসপি সারের কোন বরাদ্দ ছিলনা। শুধু বরাদ্দ ছিলো ডিএপি, ইউরিয়া সার। তাই যে পরিমাণ সার বরাদ্দ ছিলো তাতে কৃষকের একটু সমস্যা দেখা দিয়েছিলো,যা পরবর্তীতে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু সারের এ সংকট আগামীতে থাকবেনা বলে জানালেও তানোর উপজেলার জন্য এবার কি পরিমাণ সার বরাদ্দ ছিলো তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সামিমুল ইসলাম।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *