দুই শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করলেন ইউএনও, জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকারের আবেদন বাবার

রাজশাহী লীড
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মোবাইল ফোন হারানোর পর থানায় অভিযোগ করার অপরাধে আইসিটি প্রশিক্ষণার্থী সাবিকুল ইসলাম ও শাকিুল ইসলামের দুই শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার ও কেন্দ্রের আশে পাশে না আসার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল। এর প্রতিকার ও সন্তানদের প্রশিক্ষণে পূর্ণবহাল করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন ওই দুই শিক্ষার্থীর বাবা রফিকুল ইসলাম।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবিকুল ইসলাম গত ২ মার্চ আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শেষে ওই রুমের টেবিলের উপরে তার ব্যবহৃত রিয়েলমি সি-১১ ব্রান্ডের এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ভুলবশত রেখে বের হয়ে যায়। কেন্দ্র থেকে কিছুদুর যেতেই সেটির (মোবাইল ফোন) কথা মনে হলে তাৎক্ষণিক কেন্দ্রে ফিরে এসে ফোন না পাওয়ায় প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে অবগত করলে ফোনটি খুঁজে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াঙ্কা দেবী পালকে অবহিত করার পরে কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও ফোনটি উদ্ধার না হওয়ায় দুই সরহদ প্রশিক্ষকের পিতা রফিকুল ইসলাম বাগাতিপাড়া মডেল থানায় আইসিটি প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে অভিযুক্ত করে গত ৯ মার্চ লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
বিষয়টি জানার পর গত সোমবার (১৫ মার্চ) ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল তাদের সকলকে ডেকে আইসিটি প্রশিক্ষকের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করায় রফিকুল ইসলাম ও তার দুই ছেলেকে অপমানজনক কথা বলে এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর আসেপাশেও সাবিকুল ও শাফিকুল যেন না আসে এমন মৌখিক নির্দেশ দেন। এতে রফিকুল ইসলাম অপমানিত ও হতবাক হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের স্মরণাপন্ন হন এবং মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) জেলা প্রশাসক বরাবর বেআইনী মৌখিক বহিস্কারের প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনে দুই ছেলেকে পুনরায় প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করার আবেদনও জানান।
অপরদিকে গোলাম রাব্বানী নামে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আর এক শিক্ষার্থী বলেন, সে মোবাইল ফোনটি পেয়ে আইসিটি প্রশিক্ষক আজিজুর স্যারের হাতে দিলে তখন আজিজুর স্যার বলে ‘যার ফোন সে এসে নিয়ে যাবেথ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আইসিটি প্রশিক্ষক আজিজুর রহমানকে ফোন করলে সে একবার বলেন আমি ফোন দেখিনি, আর একবার বলেন আমার টেবিলেই ফোনটি ছিল পরবর্তীতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা হারানো মোবাইল ফোনটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি একথা জানানোর পরেও প্রতিষ্ঠানের নামে থানায় অভিযোগ করায় ইউএনও স্যার তাদের প্রশিক্ষণে না আসার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি তিনি এও বলেন, থানায় যেহেতু অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেহেতু থানা তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি। ফোন পেয়ে আপনার হাতে জমা দেয়ার পরও টেবিল থেকে ফোন মিসিং হলে তার দায়িত্ব কার এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজুর রহমান বলেন ‘দায়িত্ব আমারই।
এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া মডেল থানার তদন্তকারী অফিসার কামরুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল জানান, থানায় অভিযোগের কারণে নয়, তাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছে একজন সম্মানিত আইসিটি প্রশিক্ষককে অভিযুক্ত করার কারণে। যা আমাদের এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য হানিকর এবং ফোনটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কোথাও না পাওয়া সত্বেও থানায় অভিযোগ জানানোটা ঔদ্ধত্বের শামিল। তারা হয়তো নতুন একটি ফোন কিনে দেওয়ার দাবী করছেন যেটা আদৌ সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।
স্ব.বা/বা
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *