সড়কের ধারে ধারে তরমুজের বাজার,ওজনে কিনে ঠকছেন ক্রেতারা

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি: সড়কের ধারে গাড়ি থামিয়ে তরমুজ কিনছেন দূর দূরান্তের মানুষ। বাইরে থেকে কিনে সড়কের ধারে নামাতেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তরমুজ। আলাদা করে কোনো বাজারে নিয়ে যেতে হচ্ছে না। সড়কের ধারেই তরমুজ স্তুপ করে রাখা হয়েছে। উপজেলার প্রায় হাট-বাজারের সড়ক জুড়ে যেন তরমুজের বাজার হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারের সড়কের পাশে প্রায় শতখানেক ব্যবসায়ীকে তরমুজ নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়।

আর ক্রেতারা রাস্তাতেই ছোট যানবাহন মোটর সাইকেল, ভ্যান, উলকা থামিয়ে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাট ছাড়াই সড়কের ধারে তরমুজ বিক্রির এই দৃশ্য দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন বাজারে।
রাজশাহী থেকে উপজেলার বাজুবাঘার নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন হানিফ মিঞা। তিনি মোটরসাইকেল থামিয়ে ৩৩০ টাকায় একটি তরমুজ কিনলেন।

তিনি বললেন, ইফতারে বাড়ির সবাই মিলে খাবেন। সেই জন্য তরমুজটা কিনলেন।
বাঘা বাজারে রাস্তার ধারে তরমুজ নিয়ে বসে ছিলেন সুজন আলী। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন প্রতিটি তরমুজ বিক্রি করছেন ৫৫ টাকা কেজি দরে। পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব তরমুজ কিনেছেন।

তিনি বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজ এবার মিষ্টি হয়েছে। এ জন্য ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। রমজান মাসে ভালো বিক্রি হচ্ছে। করোনাকালিন এই সময়ে তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছি। পাইকার ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম জানান, নাটোর,বনপাড়া,লালপুর থেকে তরমুজ কিনে এনে স্খানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। ওজনে কিনে ওজনেই বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, মাঠ থেকে যারা কিনেন,তারা শতকরা হিসেবে কিনেন । আর বাজারে বিক্রি করেন ওজনে। আলমগীর নামের একজন বলেন, পিচে (শতকরা) কিনে ওজনে তরমুজ বিক্রি কওে মুনাফা লুফে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এতে করে ক্রয় ক্ষমতার বাহিওে চলে যাচ্ছে অনেক ক্রেতার। ইচ্ছা থাকলেও মৌসুমি ফল না কিনেই হতাশ মনে ফিরছেন তারা। তার সাথে অনেকেরই দাবি,তাই ওজনে নয়, পিচে তরমুজ বিক্রির।

শাহদৌলা সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সনজীদ কুমার সরকার বলেন, তরমুজে এন্টি অক্সিডেন্ট,কেরোটিনয়েটস থাকে। সেটা মস্তিকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। যথা এলজাইমার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। উচ্চ রক্তচাপ,কলেষ্টটেরোল,নিয়ন্ত্রন কওে ও রৌদ্রে পোড়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে। কোষ্ঠ কাঠিন্য দুর ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবেও কাজ করে। তরমুজের বীজে জিংক,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি উপাদান রয়েছে। তরমুজে ৯২% পানি,৬% চিনি ও অন্যান্য উপাদান রয়েছে ২% । তরমুজ খালি পেটে খাওয়া উচিত নয় বলে জানান এই প্রভাষক। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

এদিকে তরমুজের পাশাপশি অনেক জায়গায় বাঙ্গিও বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বাঙ্গি ওজন করে বিক্রি করছেন না। আকার ভেদে বাজারে প্রতিটি বাঙ্গি বিক্রি করতে দেখা গেছে ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। কোন কোন বাঙ্গি এর চেয়ে বেশি দামেও বিক্রি করতে দেখা গেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাঙ্গিতে ভিটামিন এ এবং সি আছে। সেই সঙ্গে ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামও রয়েছে। এ ছাড়া বাঙ্গিতে যে আঁশ (ফাইবার) আছে, সেটা ক্যানসার প্রতিরোধক। ইফতারির সময় প্রচুর মানুষ তরমুজ ও বাঙ্গি খান। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *