খানাখন্দ আর ধুলোয় ভরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় নানাস্থানে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তে জমে থাকা কাঁদামাটি শুকিয়ে ধূূলায় পরিনত হয়েছে। ফলে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে সড়কটি। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেল স্টেশনের নুরনগর খয়েরমিল রেলগেট হতে বাঘা উপজেলার সীমান্তবর্তী পাঁকা গ্রামের ইব্রাহীম ডাক্তারের বাড়ি পর্যন্ত ১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সড়কের চিত্র এটি।

আড়ানি ষ্টেশন এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, আড়ানী বাজারে যাওয়ার জন্য একমাত্র সড়ক এটি। পাশর্^বর্তী উপজেলা বাগাতিপাড়ার লোকজন পায়ে হেটে কিংবা মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনে আড়ানী বাজারে যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়েই। সড়কটি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ায় জরুরি প্রয়োজনে এখন আর ভ্যান,উলকা কিংবা অন্য কোন যানবাহনের চালকরা এই সড়কে যেতে চান না। কেউ যদি যেতেও চায় তা হলে বেশি ভাড়া দিতে হয়।

বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের মাকুপাড়া গ্রামের প্রভাষক ইউনুস আলী বলেন, আমার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলায় হলেও বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য এই সড়ক হয়ে আড়ানী বাজারে যায়। মোটরসাইকেল নিয়ে এই সড়কে যাতায়াত করার সময় গর্তে পড়ে গিয়ে মাজায় আঘাত পায়। সপ্তাহখানেক চিকিৎসার পর আমার ব্যথা ভালো হয়।

কাদিরাবাদ ক্যান্টেনমেন্ট এলাকার দয়ারামপুর গ্রামের এক গরু ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম জানান, তিনিসহ এলাকার অনেক লোক গরুর ব্যবসা করি। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী গরু বেচাকেনার জন্য হাটবারের দিন বুধবার আড়ানী হয়ে রুস্তমপুর হাটে গিয়েছিলেন। হাট থেকে ৪টি গরু ক্রয় করে ভটভটিতে বাড়িতে ফিরছিলাম। খয়েরমিল সাঁকোর কাছে গর্তে পড়ে ভটভটি উল্টে যায়। এসময় আমরা ৫ জন গরু ব্যবসায়ী পড়ে আহত হই। এছাড়াও ২টি গরুর পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পশু চিকিৎসককে দিয়ে সেই গরু দুটির চিকিৎসা করিয়েছেন।

অটোরিক্সা চালক আবু রায়হান বলেন, এই সড়কে চলার সময় হঠাৎ করেই বাতাস উঠে। সেই বাতাসে ধূলো বালি আমার চোখে পড়ে গাড়ীর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। গাড়িটি গর্তে পড়ে উল্টে যায়। এতে যাত্রীরাও দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তবে যাত্রীদের তেমন কোন ক্ষতি না হলেও অটো রিকসার লুকিং গ্লাস ভেঙ্গে যায়। তার পর থেকে এই সড়কে চলাচল এক রকম বাদই দিয়েছেন।

তকিনগর আইডিয়ার স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মুঞ্জুরুল আলম মাসুম বলেন, চাকুরির সুবাদে প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে মোটারসাইকেলে আমিসহ স্ত্রীকে নিয়ে যাতায়াত করি। শুধু আমিই নয়, অনেক মানুষ,গাড়িচালক,ব্যবসায়ীরাও যাতায়াতের জন্য সড়কটি ব্যবহার করেন। দুই উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষের জন্য সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার ফলে বেহাল সড়কে ভোগান্তির মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তিনি বলেন,সরকারের স্বদিচ্ছায় দেশে অনেক জায়গায় অনেক কিছুরই উন্নয়ন হচ্ছে। অথচ ১ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন দেখছিনা। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য দাবি জানান তিনি।

বাঘা উপজেলা প্রকৌশলী রতন কুমার ফৌজদার বলেন, তিন বছর আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে নেয়া হয়েছে। বর্তমান সময়ে সড়কটি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।

এ বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক উপ-বিভাগ-১, রাজশাহী মো. নাহিনুর রহমান বলেন, এই সড়কটির বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। নতুন একটি প্রকল্প হচ্ছে। এই প্রকল্পের সাথে সংযোজন করে সড়কটি কাজ করা হবে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *