দেনমোহরের টাকা ফেরত না দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা

রাজশাহী

বগুড়া  প্রতিনিধি :বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে গৃহবধূ ফাইমা বেগম হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়েছে। দেনমোহরের টাকা ফেরত না দেওয়ায় স্বামী সাইফুল ইসলাম তাকে শয়নকক্ষে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশ বিছানায় ঢেকে রেখে ঘরে তালা দিয়ে তিনি পালিয়ে যান। হত্যার সাত মাস পর ঢাকার একটি হোটেল থেকে স্বামী সাইফুলকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের আদালতে ১৬৪ ধারায় তিনি স্বীকারোক্তি দেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিকালে আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দিন এ তথ্য দিয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবদুল ওয়াদুদ ও আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া ব্যাপারীপাড়ার আরমান আলীর ছেলে। তিনি দুবছর আগে সান্তাহার ইয়ার্ড কলোনির মৃত আইনাল হকের মেয়ে ফাইমাকে বিয়ে করেন। এটা দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। দাম্পত্য কলহে বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সাইফুল বাধ্য হয়ে তাকে দেনমোহরের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেন। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হলে তারা আবারও বিয়ে করেন। সাইফুল এরপর থেকে দেনমোহরের টাকার জন্য ফাইমাকে চাপ দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ বাড়তে থাকে।

এক পর্যায়ে তিনি গত বছরের ৯ নভেম্বর রাতে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। লাশ বিছানায় রেখে কম্বল দিয়ে ঢেকে দেন। এরপর ঘরে তালা দিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা ১১ নভেম্বর বন্ধ ঘর থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হলে তা ফাইমার বড় বোন রোজিনা বেগমকে জানান। তারা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে বিছানায় ফাইমার ঢেকে রাখা লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে আদমদীঘি থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহতের ভাই ফারুক আদমদীঘি থানায় ভগ্নিপতি সাইফুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল ওয়াদুদ জানান, গোপনে খবর পেয়ে সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানের নিউ গুলশান প্লাজার একটি হোটেল থেকে আসামি সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। মঙ্গলবার বিকালে তাকে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুকের আদালতে হাজির করলে সন্ধ্যায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *