২৩ বছর পর নেপাল থেকে ফিরলেন ‘মৃত’ আমেনা

রাজশাহী

বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার ধুনটের নিখোঁজ আমেনা খাতুন (৮০) দীর্ঘ ২৩ বছর পর নেপাল থেকে দেশে ফিরেছেন। ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। অনেক খোঁজ করে তার সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের সবাই ধরে নেন, আমেনা মারা গেছেন। তাই ছেলে মেয়ের আইডিতে তিনি মৃত।

সরকারি সহযোগিতায় নেপালের একটি বিশেষ বিমানে সোমবার দুপুর ১টার দিকে তিনি ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন তিনি।

দীর্ঘদিন তার খোঁজ না থাকায় সন্তানদের ভোটার আইডিতে আমেনাকে মৃত দেখানো হয়েছে। তিনি ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে নিখোঁজ হয়েছিলেন।

বৃদ্ধার নাতি আদিলুর রহমান আদিল জানান, তারা সাতজন দাদিকে আনতে ঢাকায় গেছেন। তিনি (দাদি) বড় সবাইকে চিনতে পেরেছেন। দীর্ঘদিন বাড়িতে ফিরতে পেরে তিনি অনেক খুশি হয়েছেন। তারা ধুনটের ছোট চাপড়া গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবীশ আদিলুর রহমান আদিল বলেন, দাদা আজগর আলী প্রামাণিক ১৯৯৬ সালে মারা যান। দাদি আমেনা খাতুন প্রায় ৪০ বছর মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তার তিন ছেলে আমজাদ হোসেন প্রামাণিক, ফটিক মিয়া প্রামাণিক ও ফরিদ মিয়া প্রামাণিক এবং মেয়ে আম্বিয়া খাতুন আছেন। ছেলে ফটিক মিয়া ১৯৯৮ সালে সৌদি আরবে চাকরি করতে যান।

ডিসেম্বর মাসে দাদি আমেনা খাতুন বাড়ি থেকে বের হবার পর নিখোঁজ হন। গত রমজানের ঈদের আগে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তারা সন্তানদের জানান, আমেনা খাতুন নেপালে আছেন। ছবি দেখে পরিবারে সদস্যরা তাকে শনাক্ত করেন। সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলম ভিডিও কলে আমেনার সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করেন। তখন আমেনা তার সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের চিনতে পারেন।

মাসুদ আলম বলেন, নেপালে সুনসারি জেলার ইনারোয়া পৌরসভার ডেপুটি মেয়র যমুনা গৌতম পোখরালের তত্ত্বাবধানে এক বাংলাদেশি নারী আছে উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তিনি ফোনে আমেনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলে পরিচয় জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূতের পরামর্শে ১ জুন কাঠমুন্ডু থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে সুনসারিতে যান। তাকে সহযোগিতা করেন, সুনসার বাঙালি সমাজের সভাপতি বিপ্লব ঘোষ। পরবর্তীতে আমেনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলে, তার ঠিকানা জানা সম্ভব হয়। সর্বশেষ ৬ সেপ্টেম্বর আমেনা খাতুনকে সরকারি সহযোগিতায় বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

আমেনার নাতি আদিল বলেন, দীর্ঘদিন পর দাদিকে ফিরে পাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *