মোহনপুরে বিদ্যালয়ে জমিদান করে বিপাকে পড়েছেন প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের পরিবার

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার: মোহনপুরের ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের গোছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে জমিদান করে চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন সাবেক এক প্রধান শিক্ষকের পরিবার। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের জমি দখলের অভিযোগ দায়ের করেছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে গোছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন ওই গ্রামের মরহুম প্রধান শিক্ষক কুদরতুল্লা কবিরাজ। মুলত তিনি নিজে শিক্ষিত মানুষ হিসেবে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে চরম দুর্দিনের মধ্যদিয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতার লক্ষে প্রধান শিক্ষক কুদরতুল্লার মা বিদ্যালয়ে ১৫ শতক জমিদান করেন। যার প্রস্তাবিত খতিয়ান নং-৫১৯, দাগ নং-৩৪৪, রকম ভিটা, মৌজা- গোছা। ওই ১৫ শতক জমির এক পাশে রয়েছে মরহুম প্রধান শিক্ষক কুদরতুল্লার বাড়ি এবং অন্যপাশে কবর।

স্থানীয়রা জানায়, তৎকালিন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্তনুযায়ি বসতবাড়ির জমির পরিবর্তে বিদ্যালয় সংলগ্ন অন্য একটি জমি বিদ্যালয়ের সাথে বিনিময়ের মৌখিক চুক্তি অনুযায়ি পরিবার নিয়ে সাবেক প্রধান শিক্ষক কুদরতুল্লা বসবাস করছিলেন। সে অনুসারে কুদরতুল্লার মৃত্যুর পর ওই ১৫ শতক জমির উপরেই তাকে কবরস্থ করা হয়। এনিয়ে কেউ কোনো দিন কোনো আপত্তি তোলেনি। তবে এখন কেন নতুন ভাবে এধরণের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের জানা নেই।

মরহুম প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের দাবী সম্প্রতি বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান ১৩ সেপ্টেম্বর ইউএনও অফিসে আমাদের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ দিয়েছেন। সে অভিযোগে খেলার মাঠ দখলের কথা বলা হলেও সেখানে কোনো খেলার মাঠ ছিলনা আর এখন পর্যন্ত নাই। সেখানে আছে মরহুম কুদরতল্লার বড়িঘর, কবরস্থানসহ বিভিন্ন ধরণের গাছপালা। যেহেতু আমরা সেখানেই বসবাস করছি সেজন্য বিদ্যালয়ের পাশেই ১৫ শতক অন্য একটি জমি বিনিময়ের সিদ্ধান্ত দেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আমাদের বাড়িঘর এবং সাবেক প্রধান শিক্ষকের কবর রক্ষার্থে বিদ্যালয় সংলগ্ন অন্য ১৫শতক জমি বিনিময়ের মাধ্যমে অসহায় পরিবারের প্রতি সকলের সহযোগিতারও দাবী জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসলে আইনগত ভাবে জমি বিনিময় হলে আপত্তি নাই। তবে বিদ্যালয় নামীয় জমি বিনিময় সই করে আমি হাজত খাটতে চাইনা।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গোছা গ্রামের বাসিন্দা এবং ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, দানকৃত ওই ১৫শতক জমিতে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক কুদরতুল্লার বাড়িঘর আছে যার কারণে স্থানীয় ভাবে বসে পরিবর্তে অন্য জমি দেয়ার কথা ছিল এটা আমি জানি। সে অনুযায়ি তারা বসবাস করছে এবং মরহুম বরকতুল্লার কবর দেয়া আছে। সেখানে কোনো খেলার মাঠ ছিল না এবং এখনও নাই। তবে পরিবর্তে যে জমি স্কুলকে দিতে রাজি সেই জমি বিনিময় করা হলে উভয়কুল রক্ষা থাকবে। এছাড়াও সাবেক প্রধান শিক্ষকের অসহায় পরিবারের মানবিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহব্বান জানান তিনি।

তবে এবিষয়ে জানার চেষ্টায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইমরান আলীকে পাওয়া যায়নি।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সানওয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে জমি দখলের অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ওই জমির পরিবর্তে অন্য জমি বিনিময়ের সুযোগ থাকলে তা সিদ্ধান্ত নিবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।

 

স্ব:বা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *