ধুরইল ইউপি নির্বাচনে আলোচনায় ৭ জন প্রার্থী

রাজশাহী

মোহনপুর প্রতিনিধিঃ ধুরইল ইউপি নির্বাচনে আলোচনায় ৭ জন প্রার্থী

আগামী ইউপি নির্বাচনে মোহনপুর উপজেলার ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগাম সম্ভাবনা মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এখন প্রর্যন্ত এই ইউপিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আসছেন ৬ জন এবং বিএনপি সমর্থিত ১ জন।

জানা যায়, গত ২০১৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হতে ৫ জন নৌকা প্রতিকের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তারা হলেন, রবিউল ইসলাম (মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য), আনোয়ার হোসেন (জেলা যুবলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক), মুরাদুল ইসলাম (মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক), দেলোয়ার হোসেন (ধুরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক), জিমি কাটার রনি (জেলা ছাত্রলীগ সদস্য) ছিলেন। পরবর্তীতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় রবিউল ইসলামকে। কিন্তু গত নির্বাচনে তিনি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজিম উদ্দিন এর কাছে পরাজিত হন।

এবার যারা আলোচনায় এসেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন গতবারের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রবিউল ইসলাম, ধুরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ধুরইল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, এডভোকেট শহিদুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ রাজশাহী জেলা শাখার সাবেক সভাপতি জিমি কাটার রনি। তবে এবারের নির্বাচনে মুরাদুল ইসলাম অংশগ্রহণ করতে চান না।

এ বিষয়ে ধুরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমার পিতা নছিম উদ্দিন ধুরইল ইউপি কৃষকলীগ সভাপতি ও দীর্ঘদিন যাবত অত্র ইউপির আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের দায়িত্বে রয়েছেন। আমি অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় ১৯৯৫ সালে ধুরইল ইউপি ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করি। ২০০৬-৭ সালের আন্দোলনে যৌথ বাহিনীর দ্বারা আমরা নির্যাতিত হয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমার পিতাকে গুলি করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ধুরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১৫০ জন সদস্যের সরাসরি ভোটে আমি ধুরইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয় এবং ২০১৮ সালে মহব্বতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে নির্বাচিত হই ও এখন পর্যন্ত উভয় পদে সততার শহিত আমি দায়িত্ব পালন করছি। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য এই ইউপি হতে আমি সর্বদাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি। এই ইউনিয়নে পরপর দুইবার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় এই ইউনিয়নটি সরকারের আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়ে আছে।
গত নির্বাচনে আমি দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম কিন্তু পাইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের স্থানীয় সাংসদ আয়েন উদ্দিন যদি আমার প্রতি শুভদৃষ্টি দেন এবং এবারের ইউপি নির্বাচনে যদি আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আমি শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি এই ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিজয় আমি অবশ্যই নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ্ এবং এই ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে উপহার দিব।

গতবারের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, গত নির্বাচনে আমি মাত্র ৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলাম। তবে এবারে আমি মাঠ ভালোভাবে ধরে রেখেছি। গত নির্বাচনে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের দলের নেতাকর্মীরা আমাকে ব্যাপক সহযোগিতা করেছিলেন এবং এবারও তারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের স্থানীয় সাংসদ যদি চান এবং দলীয় মনোনয়ন পায় তাহলে এবার আমার বিজয় শতভাগ নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ্।

ধুরইল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম বলেন, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি এই ইউনিয়নের বিজয় নিশ্চিত করবো এবং এই ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে উপহার দিব।

বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ রাজশাহী জেলা শাখার সাবেক সভাপতি জিমি কাটার রনি বলেন, আমি জামাত-বিএনপি’র আমলে আমি তাদের দ্বারা একাধিকবার নির্যাতিত হয়েছি এবং মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছি যা জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ অবগত রয়েছেন। আমি একজন কারা নির্যাতিত নেতা। এই ইউনিয়নে আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করবো।

জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আছি এবং দলকে শক্তিশালী করার জন্য সর্বদা ভূমিকা পালন করি। আমি দলীয় মনোনয়ন পেতে চাই। দলীয় মনোনয়ন পেলে অবশ্যই বিজয় নিশ্চিত করবো।

মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কৃষক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি বংশীয়ভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমি দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেতে চাই। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি বিজয় নিশ্চিত করবো। আর কোনো কারণে যদি দল আমাকে মনোনয়ন না দেন, যাকে মনোনয়ন দেবে আমি তার হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।

স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দল থেকে যিনি মনোনয়ন পাবেন আগামী নির্বাচনে সকলে তার হয়ে একযোগে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবেন।

অপরদিকে গত নির্বাচনে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন জানান, আমি এই ইউনিয়নে পরপর তিন বার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি এবং গত দুইবার বিজয়ী হয়েছি। ১০ বছরে আমি অত্র ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের চাহিদা পূরণে অনেকটাই সক্ষম হয়েছি। অনেক রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেছি। সকল সরকারি বরাদ্দ জনসাধারণের মাঝে সব সময় সুষ্ঠভাবে বন্টন করেছি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার থাকলেও আপনি পর পর এ ইউনিয়নের দুইবার নির্বাচিত হয়েছেন এর কারণ কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সব সময় মানুষের মাঝেই থাকি। তাদের সকল সুখ দুঃখের অংশীদার হই। বিপদে আপদে তাদের ডাকে সাড়া দিই আর এটাই হল আমার জনপ্রিয়তা কারণ। এবারও যদি আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট হয় তাহলে এ ইউনিয়নে আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হব।

স্বঃবা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *