রাজশাহীতে বিশ^ মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার:  রাজশাহীতে ১-৭ আগস্ট বিশ^ মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য “মাতৃদুগ্ধদান সুরক্ষায়: সকলের সম্মিলিত দায়” (প্রটেক্ট ব্রেস্টফিডিং: এ শেয়ারড রেসপনসিবিলিটি)।

বুধবার সকালে নগরভবনের সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভাকক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মায়ের দুধ হচ্ছে শিশুর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট খাবার। শিশুর রোধ প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ মায়ের দ্রুত আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধের বিকল্প নেই। মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। এর ফলে ইপিআই কার্যক্রমে রয়েছে অভাবনীয় সাফল্য। মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে বর্তমান পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণের পর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ স্বাস্থ্যসেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি হাসপাতালে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার রাখার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বৃহৎ শিল্পকারখানাসহ ডে কেয়ার সেন্টার ও ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

তিনি বলেন, ব্রেস্টফিডিং বা স্তন্যদানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মায়ের শারিরিক ও মানসিক সুস্থতা। গর্ভবতী মায়ের দেহে বিভিন্ন হরমোনের আধিক্য দেখা যায়, যার ফলে তিনি শারিরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ প্রভাবিত হন। শিশুর জন্মের পর এই প্রভাব কিছুটা কমে এলেও তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল এবং অনেক ক্ষেত্রে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। এ সময় মায়ের যথাযথ খাদ্যগ্রহন ও পুষ্টি জরুরী। মায়ের পুষ্টিহীনতা মাতৃদুগ্ধ উৎপাদনে দুধ, ডিম, সব্জিসহ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা জরুরী। শিশুর লালন পালনে আর সব কিছুর মতো মাতৃদুগ্ধ দানে মায়ের পাশাপাশি পিতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে স্তন্যদান করবেন মা আর সেই মায়ের যত্ন, তার পুষ্টি, বিশ্রাম নিশ্চিত করবেন পিতা।

তিনি বলেন, মাতৃদুগ্ধ পান করলে মায়েদের স্তনে ক্যানসার, ডিম্বাশয়ের ক্যানসার, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পায়, শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ডায়রিয়ার প্রবণতা এবং এর তীব্রতার ঝুঁকি কমায়, শ^াসতন্ত্রের সংক্রমণ এবং কানের প্রদাহ কমায়, দাঁত ও মাড়ি গঠনে সহায়তা করে। শিশুকে মায়ের দুধ পানে ইসলামে বিধান রয়েছে, শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ অপরিহার্য। কারণ মায়ের বুকের দুধে রয়েছে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ ও উপাদানযুক্ত আল্লাহ প্রদত্ত এমন তৈরি খাবার, যা শিশু সহজেই হজম করতে পারে এবং শিশুর দেহ বৃদ্ধিতে সহায়ক। জন্মের পর শিশুর জন্য সর্বোত্তম খাবার হলো মায়ের বুকের শালদুধ।

রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফ.এ.এম আঞ্জুমান আরা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাসিকের সচিব মোঃ মশিউর রহমান।

কর্মশালায় মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উৎসাহিত করতে করণীয় বিষয়ে তথ্য চিত্র উপস্থাপন করেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম।

কর্মশালায় রাসিকের ভ্যাটেরিনারী সার্জন ডাঃ ফরাদ উদ্দিন, ডাঃ উম্মুল খায়ের ফাতিমা, উপ-সচিব তৈমুর হোসেন, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নারী মৈত্রীর প্রজেক্ট ম্যানেজার মনিরুজ্জামান মোড়ল, সহকারী সচিব শমসের আলী, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা নাজমা খাতুন, নারী মেত্রী, ঢাকা আহসানিয়া মিশনের চিকিৎসক ও রাসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের টিমলিডারগণ অংশগ্রহণ করেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *