তানোরে ইউপি নির্বাচনে নৌকা বিজয়ের কাণ্ডারি চেয়ারম্যান ময়না

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি : দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া রাজশাহীর তানোরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মনোনিত প্রার্থীদের বিজয়ের কাণ্ডারির ভুমিকা পালন করেছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না।অপর দিকে নৌকা ডুবাতে মরিয়া হয়ে ব্যর্থ হন উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। এতে করে সভাপতি সম্পাদকের বিরুদ্ধে উঠেছে সমালোচনার ঝড়, অন্যদিকে নেতাকর্মী থেকে শুরু করে ভোটারদের প্রশংসায় ভাসছেন চেয়ারম্যান ময়না।
জানা গেছে, সাত ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভা নিয়ে গঠিত উপজেলাটি। অবশ্য প্রার্থী জটিলতায় সরনজাই ইউপির ভোট স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। এজন্য ছয়টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত গত ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবারে। নির্বাচনে ছয়টির মধ্যে চারটিতে নৌকার প্রার্থীরা বিজয় লাভ করেন এবং দুটিতে বিদ্রোহী(স্বতন্ত্র) প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। তারাও সাংসদের অনুসারি হিসেবেই রাজনীতির মাঠে যে কোন ভুমিকা পালন করেন।
অপর দিকে ব্যাপক বানিজ্যের মাধ্যমে নৌকা প্রতীক দিতে না পেরে নৌকা ডুবাতে প্রতিটি ইউপিতে সভাপতি রাব্বানী ও সম্পাদক মামুন তাদের অনুসারীদের বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়ে পরাজিত হতে হয়। তারা বিদ্রোহীদের ভোটের মাঠে লড়ায়ে নামিয়ে আত্মগোপনে থাকেন নৌকা বিরোধী রাব্বানী মামুন। তবে দুই পৌরসভার মেয়রের অনুসারীরা বিভিন্ন ইউপিতে ভোট করতে গিয়েছিলেন।
দলীয় সুত্র জানায়, উপজেলা আ”লীগের রাজনীতি দুভাগে বিভক্ত। সভাপতি রাব্বানী সম্পাদক মামুন একাংশের। আর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়না ও সিনিয়র নেতারা আরেকাংশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। গত সংসদ ও উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সব শেষ ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেয় রাব্বানী মামুন। অবশ্য চলতি বছরে পৌর নির্বাচনে রাব্বানী মামুন বা সেভেন স্টারের অনুসারী তানোর পৌর মেয়র ইমরুল ও কাঁকনহাট পৌর মেয়র আতাউর রহমান নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু মুণ্ডুমালা ও গোদাগাড়ী পৌরসভায় সাংসদের অনুসারীরা নৌকা প্রতীক পাওয়ায় এদুই পৌরসভায় সেভেন স্টারেরা বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়ে নৌকা ডুবিয়ে দেন। কিন্তু তানোর ও কাঁকনে নৌকার বিরুদ্ধে কোন প্রার্থী দিয়েছিলেন না সাংসদ। বরং কাঁকনহাট পৌরসভার সাবেক জনপ্রিয় মেয়র আব্দুল মজিদ বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও তাকে বসিয়ে দেন সাংসদ।
চার পৌরসভায় সেভেন স্টারের অনুসারীরা মেয়র নির্বাচিত হয়ে সাংসদ ফারুক চৌধুরীকে নানা ভাবে বেকায়দায় ফেলতে চেষ্টা করে চরম ব্যর্থ হন। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে তানোর গোদাগাড়ীতে প্রতিটি ইউপিতে সাংসদের অনুসারিরা বিজয় লাভ করেন। যার কারনে তথা কথিত সেভেন স্টারদের চরম রাজনৈতিক পরাজয় ঘটে।
এমনকি সেভেন স্টারের কোন অনুসারীরা নৌকা পান নি। কিন্তু নৌকা দেওয়ার কথা বলে ব্যাপক বানিজ্য করেছেন তারা। মুলত এজন্যই নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়ে রাজনীতিতে এখন জিরো অবস্থায় পড়েছেন।
এদিকে তানোরে ছয়টির মধ্যে পাঁচটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী দেন রাব্বানী মামুন। সবাই পরাজিত হলেও তাদেরকে শান্তনা দিতেও আসছেন না তারা। বিদ্রোহীরা এক প্রকার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে গত মাসের ২৭ তারিখ থেকে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে বিরামহীন প্রচারনা চালিয়ে সফলতা পেয়েছেন চেয়ারম্যান ময়না। তিনি জানান রাজনীতির জীবনে কখনো নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করিনি। কারন নৌকা দেওয়ার মালিক দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌকার বিরুদ্ধে যাওয়া মানে আওয়ামীলীগের সাথে বেইমানী করা ছাড়া কিছুই না। নৌকা দেওয়ার নামে আমিলীগের সভাপতি সম্পাদক ব্যাপক বানিজ্য করে নৌকা দিতে না পেরে টাকা হালাল করতেই বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছেন। তারা আওয়ামীলীগে থাকতে পারেনা তারা আমিলীগে পরিণত হয়ে পড়েছে। তাদের কে রাজনীতির মাঠেই নেতাকর্মীরা উচিৎ জবাব দিবেন।
তানোরে নৌকার বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন, বাধাইড় ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, পাঁচন্দর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, চান্দুড়িয়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মজিবর রহমান এবং কামারগাঁ ইউপিতে নতুন মুখ ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বি ফরহাদ। বিদ্রোহী বিজয়ীরা হলেন তালন্দ নতুন মুখ ইউপি আ”লীগের সভাপতি আনারস প্রতীকের প্রার্থী নাজিম উদ্দিন বাবু ও কলমা ইউপিতেও নতুন মুখ প্রবীণ ব্যক্তি উপজেলা আ”লীগের সহসভাপতি চশমা প্রতীকের প্রার্থী খাদেমুননবী বাবু চৌধুরী।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *