নৌকার বিজয়ে রাজনীতি ছাড়ার বার্তা

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি : নৌকা বিজয়ে হতাশ হয়ে নিজ দলকেই চোর আখ্যা দিয়ে রাজনীতি ছাড়ার বার্তা দিলেন রাজশাহীর তানোর উপজেলা আ”লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী। তিনি উপজেলার পাঁচটি ইউপিতে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছিলেন।সবার প্রতীক ছিল মোটরসাইকেল। কিন্তু প্রতিটিতেই পরাজিত হয় বিদ্রোহীরা।ভোটের আগেই তিনি সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে মোটরসাইকেলর ছবি দিয়ে লিখেছিলেন এবারে মোটরসাইকেলে চড়ে জিরো সেভেন  থেকে লাকি সেভেন হতেই হবে।মটরসাইকেল প্রতিটিতে পরাজিত হওয়ার পর গোলাম রাব্বানী পুনরায় ফেসবুকে নিজের এবং চেয়ারের ছবি দিয়ে লিখেন রাজনীতি মানে সেবা করা,চুরি করা না।চুরি করে সেবক হওয়া যাইনা।বিবেকের কাছে জিজ্ঞেস করবেন চুরির চেয়ারে বসে মানুষের কল্যানকর কাজ করা যায়না,এর বিচার একদিন না একদিন হবেই।তার এসব পোস্ট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে সেই সাথে আ”লীগের শীর্ষ পদে থেকে নিজ দলকে চোর বলা মানে তিনিও এক প্রকার চোর বলেও এলাকায় আলোচনা চলছে এবং বহিষ্কারের দাবি উঠেছে আ”লীগের সর্ব মহল থেকে।
জানা গেছে, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ধাপে তানোর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।এই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিটিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছিলেন উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।তারা বিদ্রোহী প্রার্থী দিলেও কোনদিন ভোটের মাঠে আসেন নি।এমনকি রাব্বানী বিগত ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার আপন ছোট ভাই শরিফুল ইসলাম কে নৌকার বিরুদ্ধে হাতুড়ি প্রতীকে ভোট করতে নামিয়ে পরাজিত হয়ে, পুনরায় পাঁচন্দর ইউপি ভোটে আবারও সেই শরিফুল কে নৌকার বিরুদ্ধে ভোটে নামিয়ে পরাজিত হতে হয়েছে।
তূনমুলের নেতাকর্মীরা জানান,রাব্বানী মামুন নৌকার বিরুদ্ধে সব সময় অবস্থান নিয়ে থাকেন।স্হানীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দেওয়ার নামে একাধিক ব্যাক্তির কাছ বিপুল পরিমাণে মনোনায়ন বানিজ্য করেন।তাদের মনোনীত ব্যাক্তিরা নৌকা না পেলেই বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করিয়ে দেন।চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় মুন্ডুমালা ও কাঁকনহাট পৌরসভার নির্বাচন। মুন্ডুমালাতে নৌকা মনোনীত প্রার্থী ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আমির হোসেন আমিন।এখানে নৌকা ডুবাতে রাব্বানী মামুন পৌর আ”লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানক বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাড় করিয়ে দেন।নৌকা পরাজিত হয়।কাঁকনহাটে রাব্বানী প্যানেলের কেন্দ্রীয় আ”লীগ নেতা আতাউর রহমান নৌকা প্রতীক পান।সেখানে  বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন সাবেক দুবারের মেয়র আব্দুল মজিদ।কিন্তু সাংসদ ফারুক চৌধুরী তাকে বসিয়ে দেন। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয় তানোর ও গোদাগাড়ী পৌরসভার নির্বাচন। তানোরে নৌকা পান রাব্বানী মামুন প্যানেলের পৌর আ”লীগ সভাপতি ইমরুল হক।আর গোদাগাড়ীতে নৌকা পান অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস। কিন্তু রাব্বানী মামুন বা সেভেন স্টারেরা ওই সময়ের মেয়র প্রয়াত মনিরুল ইসলাম বাবুকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাড় করিয়ে নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করেন।
সিনিয়র নেতারা জানান,তারা আওয়ামী লীগ সংগঠন করার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে।তাদের মুখে আওয়ামী লীগ শব্দ মানায় না,আমিলীগ মানায়।আবার শোনা যাচ্ছে রাব্বানী নাকি এমপি ভোট করবেন।অথচ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাব কথা যারা নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে তাদের কোন জায়গা হবেনা।আমরাও চায় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্হা নেওয়া হোক।নচেৎ এলাকায় এলে তূনমুলের নেতাকর্মীরাই তাদেরকে উত্তম শিক্ষা দিতেও প্রস্তুত।
উপজেলা আ”লীগের সভাপতি মেয়র রাব্বানীর সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, চোরের রাজনীতি করা যাবেনা।আর রাজনীতিই করব না।ফেসবুকে লিখা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান চুরি করেছে এজন্যই লিখা হয়েছে। আগামীতে কাউন্সিল বিষয়ে বলা হলে কোথাও যাবনা রাজনীতিই করবনা।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *