মোহনপুরে সমন্বয়হীনতায় করোনা টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

রাজশাহী

মোহনপুর প্রতিনিধি: সারাদেশে ন্যায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলাতে শুরু হয়েছে ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেয়ার কার্যক্রম। কিন্তু মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার উদাসিনতা ও শিক্ষা বিভাগের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে করোনা এ টিকা নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মোহনপুর কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ভেন্যুতে শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯ টিকা প্রদান করা হয়েছে।

তবে কর্তৃপক্ষের অব্যস্থপনার কারণে টিকা গ্রহণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে দুই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে আগামী দিনে সু-ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারী) সকাল ১০টার দিকে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্র সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে টিকা গ্রহণের জন্য ডাকা হয়। এ ভেন্যুতে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, কেশরহাট মহিলা কলেজ, কেশরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কেশরহাট কারিগরী ইন্সটিটিউট, বিষহারা উচ্চ বিদ্যালয়, আথরাই উচ্চ বিদ্যালয়, সাঁকোয়া-বাকশৈল কামিল মাদ্রাসহ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তরভুক্ত ছিল । অথচ সেখানে টিকা প্রদানের বুথ ছিল মাত্র ৩ টি। মহিলা ও পুরুষ বুথ আলাদা থাকার নিয়ম থাকলেও সেখানে ছিল না। টিকার পর অপেক্ষামান রুম ছিল না। সকাল থেকে ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড়। সেখানে ছিলনা কোনো ধরণের স্বাস্থ্যবিধি। ঠেলাঠেলি ও গাদাগাদিতে অস্থিরতার মধ্যেই দাঁড়িয়েই টিকা নিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। এজন্য অনেকটায় কাহিন হয়ে পড়ে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা।কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা জানান,টিকা দেয়ার জন্য কোনো প্রকার সু-ব্যবস্থা ছিল না ভেন্যুতে। ভিড়ের মধ্যেই ধাক্কাধাক্কি করে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে হচ্ছে। এজন্য আমি টিকা নিতে যেতে পারিনি।

বিষহারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দিপেন্দ্রনাথ সাহা প্রতিবেদক কে বলেন , টিকা প্রদানের ব্যবস্থাপনা খুবই দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের সুস্থ রাখার জন্য সরকার বাহাদুর বিনামুল্যে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। ভেন্যুগুলো টিকা প্রদানের আগের দিন পরিদর্শন ও প্রচার-প্রচারনা এবং শ্রেণী মাফিক টিকাদান নির্দেশ থাকলেও মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডাঃ আরিফুল কবীর ও এমটি (ইপিআই) টেকনিশিয়ান শাহিন আলম বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেননি টিকা কেন্দ্রেও তাঁকে দেখা যায়নি।এমনকি ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ও টিকা নিতে না পেয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন অনেক শিক্ষার্থী। এতে করে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। শ্রেণীবিন্যাস ছাড়াই একদিনেই সকল শিক্ষার্থীদের ডাকা হয়েছে।

মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আরিফুল কবির কোভিড-১৯ স্কুল কেন্দ্র পরিদর্শন টিকা কার্যক্রম উদ্ধোধন করেন নাই । এ কারণে চরম ভোগান্তিসহ অস্বস্তিকর পরিবেশেই টিকা দেয়া হচ্ছে। কেশরহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাজরুল ইসলাম বলেন, আজ শিক্ষার্থীদের টিকা নিতে চরম ভোগান্তি পড়তে হয়েছে।তাছাড়া টিকা কেন্দ্রে বিশ্রামের কোন জায়গা নাই। পর্যায়ক্রমে টিকা দেয়া হলে ভাল হতো। কর্তৃপক্ষ আগামী দিনে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশাবাদী তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুত্তাদ্দির আহম্মেদ বলেন, কেশরহাট ভেন্যুতে ২ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে করোনা টিকা গ্রহণে অংশ নিতে আহব্বান করা হয়। তবে ছোট ছোট বাচ্চারা টিকা ফুরিয়ে যাবে ভেবে না বুঝে ঠেলাঠেলি, গাদাগাদি করছিল এ জন্য শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা উপেক্ষিত হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। সামনের দিন গুলিতে টিকা প্রদানের সু-ব্যবস্থা থাকবে বলে আশাবাদী তিনি। মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুল কবীর কোভিড-১৯ স্কুলকেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেননি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য প.প কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করে মোবাইল ফোন বন্দ পাওয়া যায়।

 

স্ব:বা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *