তানোরে বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা নারী বিচার পাচ্ছেনা কোথাও, বিপাকে পরিবার

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নারীর ঘটনায় ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ওই নারীর পরিবার বিচার পাচ্ছেনা কোথাও। এদিকে দিন যতই যাচ্ছে ততই অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে বেড়ে উঠছে শিশুটি। ফলে,ধর্ষণের শিকার ওই নারী পেটে বাচ্চা নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। না পাচ্ছেন বাচ্চার পিতৃপরিচয় না পাচ্ছেন ধর্ষনকারীদের বিচার। এতে করে ধর্ষনের শিকার ওই নারী বাড়ি থেকে না পারছেন বের হতে না পারছেন স্বামীর বাড়িতে যেতে। যার জন্য চারিদিক থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ধর্ষনের শিকার নারীর পরিবার। এতে ধর্ষনের শিকার ওই নারী পেটে বাচ্চা নিয়ে বিচারের আশায় ঘুরছে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। কিন্তু কোথাও বিচার পাচ্ছেনা তাঁরা। তবে বিষয়টি নিয়ে পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ওই নারীর বাচ্চা জন্মগ্রহণের পরে বিচার সালিশ করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। এমনকি ধর্ষনের শিকার নারীকে কোথাও কোনরকম অভিযোগ দিতে নিষেধও করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলে নারীর পরিবারের কাছে থেকে জানা গেছে। ফলে অসহায় দরিদ্র নারীর পরিবার করুন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অন্যদিকে এদের ভয়ে থানায় আসতেও পারছেন না ধর্ষনের শিকার নারীর পরিবার।

 

সম্প্রীতি, উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির ধুবইল সাহাপুর এলাকার জৈনক ব্যাক্তির মেয়ের প্রায় দু’মাস আগে গোদাগাড়ী উপজেলার মাখরান্দা এলাকায় বিয়ে হয়। এঅবস্হায় কয়েক দিন পর স্বামীর সন্দেহ হলে পরিক্ষা করে দেখেন প্রায় চারমাসের বাচ্চা পেটে। স্বামী কোনভাবেই মানতে না পেরে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় তার স্ত্রীকে। বর্তমানে মেয়েটি পিতার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

 

খোজ নিয়ে জানা গেছে, গত আলু মৌসুমে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই মেয়ের সাথে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিবাহিত সাহাপুর গ্রামের খতেরের পুত্র পলাশ। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হলে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক বা মিলামেশা করেন। এখানেই শেষ না গত ঈদের পর পলাশের মাধ্যম দিয়ে সাহাপুর গ্রামের আজিজের পুত্র শামিমও সম্পর্ক গড়ে তুলে দুজন মিলে লাগাতর ধর্ষন করেন। যার কারনে ওই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

 

সরেজমিনে ভিকটিমের সাথে কথা বলা হলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার স্বামীও নিবেনা এবং বিচারের জন্য চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের কাছে বিচার চাইতে গেলে তিনি জানান দুজনের নাম এসেছে। আমি এখন কার বিচার করব।বাচ্চা হওয়ার পর ডিএনএ টেষ্ট করে পিতা কে তখন বিচার করা হবে।

 

ভিকটিমের মা জানান, বিয়ের আগে আমার মেয়ে কিছুই বলেনি।বিয়ের পর এসব শুনছি।পলাশ আর শামিম আমার মেয়ের জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। আবার চেয়ারম্যান বাচ্চা হওয়া পর্যন্ত থামতে বলেছে।এতদিন আমার মেয়ের বাচ্চা চিকিৎসা খেতে দিব কিভাবে। যা ছিল মেয়ের বিয়ে দিতেই সব শেষ।মেয়েকে একা বাড়িতে রাখতে পারছিনা কারন বারবার আত্মহত্যার কথা বলছে। তিনি আরে জানান আমার বাড়ি পেট্রোল মেরে পুড়িয়ে দিবে।চরম আতঙে বাস করছি।জানিনা কখন কি হয়ে যায়।আবার শামিমের স্ত্রী এসে আমার মেয়েকে কোরআন শরিফে হাত দিয়ে তার স্বামী জড়িত না এমন হুমকিও দিচ্ছেন।

তবে শামিম জানান আমি এঘটনার সাথে জড়িত না। অবশ্য পলাশের সাথে কোনভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।তার বাড়িতে ভোজের আয়োজন চলচিল একজন বলেন পলাশ বাড়িতে আছে।কিন্ত পরে বাড়ির লোকজন বলেন পলাশ বাড়িতে নেই।

পাঁচন্দর ইউপির চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিনের ব্যক্তিগত ০১৭১৮-০৩১৯৮১ এই মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাকিবুল হাসান জানান, এঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্হা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *