মোহনপুর থানা পুলিশের তৎপরতায় আইন-শৃংখলার উন্নতি

রাজশাহী
মোহনপুর প্রতিনিধি: মোহনপুর থানার তৎপরতায় কমেছে পারিবারিক কলহ, ঝগড়া-বিবাদ, মাদক এবং সন্ত্রাস। সেইসাথে বেড়েছে  আইন-শৃংখলার উন্নতি। পাশাপাশি বেড়েছে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ও ভরসা। সুতরাং মোহনপুর থানা এলাকায় প্রতীয়মান হয় পুলিশই জনতা জনতাই পুলিশ। এ থানায় বর্তমানে জনসাধারণ পুলিশকে এবং পুলিশ জনসাধারণকে সহযোগিতা করে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এবং ওসি তদন্ত তৌহিদুর রহমানের প্রতি জনসাধারণের বিশ্বাস স্থাপিত হয়েছে। ওসি তৌহিদুল ইসলাম নিরলসভাবে সকাল হতে ভোররাত পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আইন-শৃংখলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও তদারিক করে যাচ্ছেন।
 উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এবং ১টি পৌরসভায় বিট পুলিশিং এর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করা সহ বিট পুলিশিং এর সদস্যদের নিয়ে প্রায় সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সভা-সমাবেশ, পারিবারিক কলহ, ঝগড়া-বিবাদ নিরসন করছেন তিনি।পুলিশ সবকিছু ভালোভাবে দেখভাল করায় মোহনপুর এলাকার সাধারণ মানুষ ওসি তৌহিদুল ইসলাম ও মোহনপুর থানার পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, ওসি তৌহিদুল ইসলাম এবং ওসি তদন্ত তৌহিদুর রহমানের সময়ে নিয়মিত মাদক মামলা হয়েছে-১৬৯ টি: খুনের-৭টি, অপহরণ-৭টি, অস্ত্র আইনে-১টি, অন্যান্য-৪২টি, ধর্ষণ-১৮টি, নারী ও শিশু নির্যাতন-৩০টি, প্রতারণা-৫টি, আত্মহত্যার প্ররোচনা-১টি, চুরির-১টি। অপমৃত্যু মামলা হয়েছে-৩৯টি।
এসময়ে তারা নিয়মিত মামলায় গ্রেপ্তার করেছেন ৩৩২ জনকে, জিআর ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেপ্তার করেছেন ১১৮ জনকে, জিআর সাজা ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেফতার করেছেন ২১ জনকে, সিআর ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেপ্তার করেছেন ১২২ জনকে, সিআর সাজা ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেপ্তার করেছেন ২৯ জনকে, মোবাইল কোর্টে সাজা হয়েছে ১২ জনের ও অর্থদণ্ড হয়েছে ১৩,৫০০/ টাকা। ভেজাল বিরোধী মোবাইল কোর্টে সাজা হয়েছে ৩ জনের।
অপরদিকে এসময়ে তারা মাদক হেরোইন উদ্ধার করেছেন ৯৮০ গ্রাম যার মূল্য- ৩,৯২,০০০০/ টাক, চোলাই মদ ১০০৭ লিটার যার মূল্য ৬,৫৪৩২০/ টাকা, ফেনসিডিল উদ্ধার করেছেন ৬০ বোতল যার মূল্য ৯০,০০০/ টাকা, জাওয়া উদ্ধার  করেছেন ৩০০ লিটার যার মূল্য ১,৫০,০০০/ টাকা, গাঁজা উদ্ধার  করেছেন ২ কেজি ৩২০ গ্রাম যার মূল্য ৪৪,৭০০/ টাকা, ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছেন ২০০৩ পিস যার মূল্য ৬,০০,৯০০/ টাকা, ট্যাপেন্ডা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছেন ১৯৮ পিস যার মূল্য ৮,৯১০/ টাকা, ক্যান উদ্ধার করেছেন ২৪৪ পিচ যার মূল্য ৫৩,৬৮০/ টাকা, অ্যালকোহল উদ্ধার করেছেন ১৬২ পিচ যার মূল্য মাত্র ৪৫,৬০০/ টাকা। তাদের  সময় তারা ভিকটিম উদ্ধার করেছেন ২২ জনকে, হারানো মোবাইল উদ্ধার করেছেন-৪১টি এবং ভ্যান উদ্ধার করেছেন-২টি, নারী ও শিশু অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছেন প্রায় ৯৯৭টি, প্রতারণার অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছেন ৩৩টি, পারিবারিক কলহ নিষ্পত্তি করেছেন ৩৪২টি, জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যার নিষ্পত্তি করেছেন প্রায় ১১৩৬টি, সিআর মামলা নিষ্পত্তি করেছেন ৫৬টি, কোর্ট পিটিশন মামলা (১৪৪ ও ১৪৫ ধারা) সমাধান করেছেন প্রায় ৭০টি।
কেশরহাট পৌর এলাকার এবং উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের জনসাধারণরা বলেন, একসময়  মোহনপুর থানা এলাকা ছিল মাদকের অভয়ারণ্য। সন্ধ্যা নামলেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসত মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রেতাদের মধ্যে নিত্যনতুন ঝগড়া তো লেগেই থাকত। পুলিশ প্রশাসনের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতো না থাকায় প্রায় প্রতিরাতে ঘটতো ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি, চুরি, ছিনতাই ইত্যাদি। তবে বর্তমানে পুলিশের সৌজন্য মূলক কার্যক্রম দেখে অনেকটা  জনসচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যার ফলে উপজেলাজুড়ে বাল্যবিবাহ, মাদক নির্মূল, চুরি-ছিনতাই সহ সাধারণ অপরাধ কমে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। সুতরাং পুলিশের ভূমিকা দেখে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক প্রকার শান্তি বিরাজ করছে। এটা সম্ভব হয়েছে ওসি তৌহিদুল ইসলাম এবং ওসি তদন্ত তৌহিদুর রহমানের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে। ( তবে এ ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে ওসি মোস্তাক আহমেদ এর সময় থেকে। বর্তমানে তিনি বাগমারা থানায় ভারপ্রাপ্ত  কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। সেখানে দ্বায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তিনি ৬ বার জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছেন।) মোহনপুর থানা হতে ওসি মোস্তাকের প্রস্থানের পর মোহনপুর থানায় ১৯/১১/২০২০ইং তারিখে যোগদান করেছেন ওসি মোঃ তৌহিদুল ইসলাম এবং ২২/১১/২০২০ইং তারিখে যোগদান করেন ওসি তদন্ত তোহিদুর রহমান। এ থানায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানোর সাফল্য হিসেবে ইতিমধ্যে ওসি তৌহিদুল ইসলাম এবং ওসি তদন্ত তৌহিদুর রহমান জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও শ্রেষ্ঠ ওসি তদন্ত নির্বাচিত হয়েছেন।
থানা এলাকার ৬টি ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র এবং সাধারণ মানুষদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, বর্তমানে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং সকল অফিসার যথেষ্ট আন্তরিক। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে তারা অসংখ্য পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান করছেন। নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে তারা অত্র থানা এলাকাকে মাদকমুক্ত করছেন। বর্তমানে মোহনপুর থানা পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার। পাশাপাশি তারা আরো বলেন, সরকারের ৯৯৯ সেবার মাধ্যমেও আমরা উপকৃত হচ্ছি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মোহনপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন কবিরাজ বলেন, আমাদের মোহনপুর উপজেলার লোকজন বরাবর শান্তি প্রিয়। এখানে তেমন রাজনৈতিক সহিংসতা নেই। আমাদের মোহনপুর থানার ওসি এবং ওসি তদন্ত সহ সকল পুলিশ অফিসারগণ মানবিক পুলিশের ভূমিকা পালন করেন। তাদের সার্বিক কার্যক্রমে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
মোহনপুর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক ও বাকশিমইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের থানার অফিসার ইনচার্জ এবং ওসি তদন্ত সহ সকল অফিসারগণ যথেষ্ট আন্তরিক এবং অত্রথানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তারা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান করছেন।
মোহনপুর থানার এসআই (নিঃ) আলহাজ উদ্দিন বলেন, আমি প্রায় ১৫ মাস পূর্বে অত্র মোহনপুর থানায় যোগদান করার পর হতে থানার অফিসার ইনচার্জ এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) স্যারদের সার্বিক সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনায় অন্যান্য সকল অফিসার ফোর্সদের এবং নেতৃস্থানীয় সকলের সহযোগিতায় অত্র মোহনপুর থানার আইনশৃঙ্খলা রাক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টার মাধ্যমে থানা এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সমর্থ হয়েছি। পরবর্তী দিনগুলোতেও সচেষ্ট থাকবো ইনশাআল্লাহ্।
মোহনপুর থানার ওসি তদন্ত মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয় লোকজন নিজনিজ অবস্থানে নিজেদের দ্বায়িত্ব ও সীমাবদ্ধতা সংক্রান্ত দ্বায়িত্বশীল হলে আমরা পুলিশ ফোর্স মোহনপুরবাসির জন্য সব ধরণের আইনী সেবা নিশ্চিত করতে পারবো বলে আশা করি।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৫ মাস পূর্বে মোহনপুর থানায় যোগদান করি। থানার সকল অফিসার, এলাকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষদের নিয়ে থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা জন্য আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং আগামীতেও করে যাবো ইনশাআল্লাহ্।
স্ব:বা/না
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *