তানোরে ট্যাক্স দাও ১০টাকা কেজি চাল নাও নইলে ফেরত যাও

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: দশ টাকা কেজি দরে চাল নিতে আসা গরীব অসহায় দরিদ্র ভুমিহীনদের জন্য সরকারের বিশাল ভর্তুকির চাল নিতে ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে জোর জবর করে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির ইলামদহী পাকুয়া হাটে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এঘটনাটি।
ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মতিনের নির্দেশনায় হচ্ছে এমন কাজ বলে একাধিক ভুক্তভোগীরা নিশ্চিত করেন। চেয়ারম্যান মতিনের এমন কান্ডে এলাকা জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। সোমবার সকালের দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ইলামদহী পাকুয়া হাটে দেওয়া হচ্ছে দশ টাকা কেজির চাল। ইউপি এলাকার একেবারে দরিদ্র ভুমিহীনদের জন্য বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশাল ভর্তুকি দিয়ে মাত্র দশ টাকা কেজি দরে মাসে ত্রিশ কেজি চাল কিনতে পারবেন একজন উপকার ভোগী । ৫০ কেজির বস্তা খুলে ত্রিশ কেজির পরিবর্তে সাড়ে উনত্রিশ কেজি করে ডিজিটাল মিটারে ডিজিটাল কারসাজি করছেন ডিলার রফিকুল। যেখানে চাল দেওয়া হচ্ছে তার সামনে ছোট চোকিতে বসে ট্যাক্স আদায় করছেন গ্রাম চৌকিদার নুরুল ।তিনি প্রতিজনের কাছ থেকে গড়ে ৫৩ টাকা করে ট্যাক্স নিয়ে একটি সাদা কাগজের চিরকুট দিচ্ছেন। সেই চিরকুট নেওয়ার পর মিলছে চাল। ট্যাক্স নেওয়া ব্যক্তির কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনি ইউনিয়ন পরিষদের রশিদ ছাড়া কিভাবে ট্যাক্স আদায় করছেন, তিনি জানান চেয়ারম্যান আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেই ভাবেই আদায় করছি।
চাল নিতে আসা একাধিক মহিলারা জানান, এতদিন চাল নিয়েছি কোনদিন এভাবে ট্যাক্স দেওয়া লাগেনি।কিন্তু এবার ৫৩ টাকা করে ট্যাক্স দেওয়ার পর চাল দিচ্ছে। কেউ দিতে না পারলে তাকে চাল দেওয়া হচ্ছে না।
আমরা গরীব অসহায় এজন্যই তো সরকার দশ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছেন। কোন কিছু না দেখে গড়ে ৫৩ টাকা ট্যাক্স নিয়ে সাদা কাগজের চিরকুট দিচ্ছেন। সেই চিরকুট দিলে ডিলার চাল দিচ্ছেন। তাও ত্রিশ কেজির পরিবর্তে সাড়ে উনত্রিশ কেজি করে কম দিলেও টাকা ঠিকই নিচ্ছে।  আমাদের সাথে জুলুম করে আদায় করা হচ্ছে ট্যাক্স। তাদের সাথে কথা বলতেই রফিকুল নামের এক ইউপি সদস্য আসেন।তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এভাবে এখানে রশিদ ছাড়া ট্যাক্স আদায় করা যায় কিনা,তিনি জানান এভাবে ট্যাক্স আদায় সঠিক না, ইউনিয়ন পরিষদে  ট্যাক্স দিয়ে রশিদ নিবেন এটাই নিয়ম ।আর এবিষয়ে আমি অবগত না। ডিলার রফিকুলের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান ট্যাক্স আদায়ের জন্য মাইকিং করা হয়েছে। এজন্যই আদায় করা হচ্ছে। চাল কম দেওয়া হচ্ছে কেন, তিনি জানান ৫০ কেজির বস্তা দিয়েছে। বস্তায় কম আছে এজন্য সামান্য পরিমান কম দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন। রফিকুল ডিলারের আওতায় উপকার ভোগী আছেন ৮৩৫ জন। ৫৩ টাকা করে জনপ্রতি ট্যাক্স নেওয়া হলে ৪৪ হাজার ২৫৫ টাকা আদায় হবে।
চাল কম এবং ট্যাক্স আদায়ের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি বলেন চাল কম দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা,বাড়ি বাড়ি গিয়ে ট্যাক্স আদায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে।মুলুত এজন্যই   সেখানেই ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলীর ০১৭১৪-৪৬০৩৩৬ মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেন নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, যারা এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন তারা লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *