তানোরে ইফতারের জন্য স্কুলে স্কুলে চাঁদাবাজি

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে ইফতারের জন্য প্রত্যেক স্কুল থেকে দুই হাজার টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। আগামী ২৮ এপ্রিল তানোর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রায় দুই হাজার মানুষকে চিঠি দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না সবকিছু সমন্বয় করছেন।

তানোরে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১২৮টি। নিম্ন ও উচ্চ বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা আছে ৯০টি। সব প্রতিষ্ঠান থেকে দুই হাজার করে টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কয়েকজন মাদ্রাসা সুপার ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তবে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোন উপলক্ষ পেলেই তানোরে শুরু হয় বেপরোয়া চাঁদাবাজি। এবার ইফতারের নামেও টাকা তোলা হচ্ছে। এই টাকা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিজের পকেট থেকে অথবা ‘নয়ছয়’ করে দিতে হচ্ছে।

তানোরের চুনিয়াপাড়া হাজী একতার আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, ইফতারের জন্য তিনি দুই হাজার টাকা দিয়েছেন। মুণ্ডুমালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামিল মার্ডিকে টাকা দেওয়া হয়েছে। যোগাযোগ করা হলে কামিল মার্ডি টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। কামিল জানান, তিনি এ পর্যন্ত চারটি প্রতিষ্ঠানের আট হাজার টাকা নিয়েছেন। তানোর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সেলিমকে এ টাকা দেওয়া হবে। সেলিম টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছেন।

তবে কারও কাছ থেকে টাকা আদায় করার জন্য বলা হয়নি বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক মাইনুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, এই ইফতারে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী। তানোরে সাংসদবিরোধী একটি পক্ষ আছে। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। কোন টাকা তোলা হচ্ছে না। সাংসদ নিজেই ইফতারের জন্য টাকা দিচ্ছেন।

তবে তানোরের বৈদ্যপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. শাহাবুদ্দিন জানান, ইফতারের জন্য তিনিও ইফতার মাহফিলের জন্য দুই হাজার টাকা দিয়েছেন। টাকা নিয়েছেন গোকুল মথুরা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল হামিদ। যোগাযোগ করা হলে আবদুল হামিদ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

হামিদ জানান, এ পর্যন্ত তিনি ১২ মাদ্রাসার ২৪ হাজার টাকা তুলেছেন। তাকে ইফতারের জন্য টাকা তুলতে বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতা ও চাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান। জিল্লুর টাকা কাকে দেবেন জানতে চাইলে হামিদ বলেন, ‘সেটা বলতে পারছি না। তিনি ইফতার আয়োজনের দায়িত্বে আছেন।

জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি ইফতার আয়োজনের দেখাশোনার দায়িত্বে আছি। কিন্তু কারও কাছ থেকে তো টাকা নেওয়া হচ্ছে না।উপজেলা প্রশাসনের আয়োজন করা এ ইফতারের জন্য টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তানোরের ইউএনও পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘চাঁদাবাজি করার কথা না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

ইউএনও জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না ইফতার মাহফিল আয়োজনের সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন। কথা বলার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যানকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।সূত্র-সিল্কসিটি

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *