তানোরের পাঁচন্দর ইউপি চেয়ারম্যান মতিনকে নিয়ে গুঞ্জন!  

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, ডিপ অপারেটর বাণিজ্যে ও ক্ষমতার অপব্যবহার ও কথিত নাদেরা-তাহেরার প্রেম কাহিনী ও দ্বিগম্বর হয়ে পালানো কাহিনীসহ মুখরুচোক নানা গুঞ্জন উঠেছে, প্রতিনিয়ত গুঞ্জনের ডালপালা-শাখা-প্রশাখা মেলছে।
এসব কারণে তার জনপ্রিয়তা এখন প্রায় শূণ্যর কোঠায়। সে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্ম করছে বলে অভিমত সাধারণের। স্থানীয়রা বলছে, তিনি ওয়ার্ড উন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় তার ব্যক্তিগত পুকুর পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন ও নিজের বাড়ির ব্যক্তিগত রাস্তা নির্মাণ করেছেন। সরকারের বরাদ্দকৃত জনগনের প্রাপ্য সোলার প্যানেল ও পানি সেচের অত্যাধুনিক মটরের সন্ধান মিলেছে তার বাড়িতে। ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে নৈশ্যপ্রহরী ও গভীর নলকুপের অপারেটর নিয়োগে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেওলা গ্রামের কৃষক লীগের সভাপতি আশির উদ্দিনের ছেলের চাকরি দেওয়ার নামে ৫ লাখ টাকা নিয়েও চাকরি দেন নি। পরবর্তীতে একই গ্রামের  আলমগীর এর কাছে দশ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন মানুষের মুখে মুখে প্রচার আছে।
তিনি,ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ড কুন্দাইন গ্রামের ঈদ-গাহ ময়দানের উন্নয়নে স্থানীয় এমপির  বিশেষ বরাদ্দ টিআর প্রকল্পের তিন লাখ টাকা বাজেট ঘোষণা করলেও এক লাখ টাকা দিয়ে বাকি দুই লাখ টাকা তিনি হজম করেন বলেও গ্রামবাসির মাঝে গুঞ্জন রয়েছে। অপরদিকে যে এক লাখ টাকা দেয়া হয় সেই টাকা প্রকল্প সভাপতি কৃষ্ণপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বুলারের নামে আত্নসাতের অভিযোগ তুলেছে গ্রামবাসি। ফলে সেই ঈদ-গাহ ময়দানে আজও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ হিসাবের খাতায় ঈদগাহ উন্নয়নের ব্যায়ের খাত তিন লাখ টাকা ঠিকই দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসির।
স্থানীয় সুত্র জানায়, তার  দূর্নীতির চাবিকাঠি গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ বানিজ্যে অপারেটর পরিবর্তন হলেই দুই থেকে তিন লাখ টাকা নেন এই নেতা। এছাড়াও ঘনিষ্ঠ আত্নীয়-স্বজনদের সরকারী পানির পাম্প মটর প্রদান,ঘনিষ্ঠ সহচরদের নামে একাধিক বিভিন্ন সরকারি অনুদানের কার্ড প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে জনমনে। ইউপি যুবলীগের সম্পাদক মোসারফ হেসেনের কাছে থেকে ডিপ কেড়ে নিয়ে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে বিএনপি মতাদর্শী অন্য ব্যক্তিকে অপারেটর নিয়োগ করেছেন বলে প্রচার রয়েছে। এছাড়া ওযুবলীগের ত্যাগী নেতা আব্দুল হালিমের কাছে থেকে ডিপ কেড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে জামায়াত মতাদর্শীকে অপারেটর করা হয়েছে বলে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতায় অত্র ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী মোজাচ্ছের নির্বাচনী মাঠে মারা যান। এঘটনায় পরের দিন থেকেই এলাকার বিএনপি-জামাত নেতাকর্মীদের যেমন ব্যাবসায়ী সোয়াইবুর, আব্দুল ওহাব ও নমির উদ্দিনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের নামে তালিকা তৈরী করে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছে থেকে মাথা পিছু পঞ্চাশ হাজার থেকে লাখ  টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে বলেও গ্রামবাসির মাঝে আলোচনা রয়েছে। অপরদিকে নিজের চাকরির ক্ষেত্রেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে চাকরিরত প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার। এছাড়াও তার পুত্রকে দিয়ে মাছ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা মাদক ব্যাবসাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছে বলে এলাকায় আলোচনা আছে। এবং ৫শ পিচ ইয়াবা টেবলেটসহ চেয়ারম্যান পুত্রকে আটক করে র্য্যাব।
তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে জনবিচ্ছিন্ন চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন এর ভাড়াটে ফেসবুক কর্মীরা। অথচ মতিন চেয়ারম্যান ১১টি ডিপটিউবয়েল থেকে নগদে প্রায় ২২ লাখ টাকা নিয়ে জামাত-বিএনপি মতাদর্শীদের অপারেটর নিয়োগ করেছে বলে শোনা যাচ্ছে। শিদপুর মৌজার ডিপ অপারেটর ইকবাল এর কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়েও তাকে অপারেটর না করে মৃত মাইনুল এর কাছে থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে ডিপ দিয়েছে। সেই টাকার শোকে মাইনুল হার্টএ্যাটাক করে  মারা গেছে বলে মনে করছে প্রতিবেশীরা। এছাড়াও মৎস্য ও গরুর খামারের নামে সেচ মটর স্থাপন এবং অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ পাইয়ে দিয়ে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্যে করছে। সাধারণের ভাষ্য গোপণে অনুসন্ধান করলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচন্দর ইউপি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *