এবার বাজেটের আগেই ব্রিটিশ কোম্পানির শুরু হয়েছে সিগারেট সিন্ডিকেট

রাজশাহী

সারোয়ার হোসেন, তানোর : সবকিছুর বেপরোয়া সিন্ডিকেট, বাকি ছিল সিগারেট, কিন্তু এবার ব্রিটিশ এন্ড টবেকো কোম্পানির সিগারেট নিয়ে শুরু হয়েছে প্রচুর সিন্ডিকেট। এখন থেকেই কোম্পানির বড় কর্তাদের দিক নির্দেশনায় চলছে সিগারেট স্টকের ধুম। সারা দেশের মত রাজশাহীর তানোরেও শুরু হয়েছে সিগারেট কান্ডখানা। প্রতি প্যাকেট বাড়তি দামে কিনছেন গ্রাহক থেকে শুরু ছোট মুদি ও চা স্টলের দোকানিরা। এমনকি চাহিদা মত পাচ্ছে না সিগারেট বলেও একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত করেন। উপজেলায় মোড়ে চা কপির দোকান করেন ডলার। তিনি জানান বেশ কয়েকদিন ধরে কোন কারন ছাড়াই বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বড় ব্যবসায়ীরা। তাও চাহিদা মত মিলছে না। দাম না বাড়লেও শুরু হয়েছে সিগারেট নিয়ে মহা সিন্ডিকেট।

শিতলীপাড়ায় চায়ের দোকানী আজিমুল জানান, শুধুমাত্র গোল্ডলিফ, বেনসন, স্টার ও ডারবি সিগারেটের প্রচুর সঙ্কট। এই কোম্পানির সিগারেটের চাহিদা প্রচুর। বিশেষ করে ডারবি সিগারেট প্রায় সবাই সেবন করেন। কিন্তু বাড়তি দাম। আমরা বাড়তি দামে কিনলেও গ্রাহকের কাছে নেওয়া যাচ্ছেনা বাড়তি দাম। অন্য জিনিসের আলাদা বিষয়। কিন্তু সিগারেট নিয়ে কেন মহাকান্ড। অথচ প্যাকেটের গায়ে সঠিক মুল্য থাকলেও সে অনুযায়ী দাম নিচ্ছেনা। মনে হচ্ছে সবকিছুই অরাজকতা। জানা গেছে, সারা দেশেই ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানির সিগারেট এক চেটিয়ে মার্কেট দখল করে আছেন। আর তানোর উপজেলায়ও একক মার্কেট সিগারেট গুলোর। বেশির ভাগ ধুমপায়ীরা ডারবি নামের সিগারেট টি বেশি সেবন করে থাকে। যেই ডারবি সিগারেট ৭৮ টাকা প্যাকেট বিক্রি হত সেটি ৩০০/১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি শলাকা পাঁচ টাকায় গ্রাহকরা কিনতে পারত। কিন্তু এখন ৬ টাকা সাড়ে ৬ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। স্টার ২০ শলাকার প্যাকেটের দাম ১২৬ টাকা, বর্তমানে সিন্ডিকেটে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা করে। গোল্ডলিফ সিগারেট ২০৪ টাকা ছিল ২০ শলাকার প্যাকেট, এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত। বেনসন ২৭০ টাকার বিপরীতে বিক্রি হচ্ছে ২৮৫ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত।

সুত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র তানোর পৌর সদর গোল্লাপাড়া থানা মোড়, উপজেলা ক্যাম্পাস এটুকু জায়গায় গড়ে প্রতিদিন ১০/১২ লাখ টাকার সিগারেট কেনাবেচা হয়। যদি সামান্য এটুকু জায়গায় এই পরিমান টাকার সিগারেট কেনাবেচা হলে পুরো উপজেলা জুড়ে কত লাখ টাকার সিগারেট সেবন হয় বুঝতে হবে। কি পরিমান দখলে মার্কেট। প্রতি জুন মাসের কয়েক মাস আগে থেকেই শুরু হয় সিগারেট সিন্ডিকেট। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে যে সিগারেট মজুত করা হচ্ছে সেই সিগারেট আগামী অর্থ বছরের অর্ধেক মাস পার করে। এভাবে বিদেশি এই কোম্পানিটি কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে।

বেশকিছু বিক্রয় কর্মীরা জানান, আমাদের কেও চাহিদা মত সিগারেট দিচ্ছে না। অথচ সিগারেটের কোন ঘাটতি নেই। আবার কিছু বাড়তি দামে বড়বড় ব্যবসায়ীদের দেওয়ায় হচ্ছে কার্টুনের কার্টুন সিগারেট। মরছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। শীব নদীর ব্রীজের পূর্ব দিকে ছোট চায়ের দোকান করেন আব্দুল কাদের, তিনি জানান আজ তানোরে গিয়ে সিগারেট পায়নি বাধ্য হয়ে কেশরহাট থেকে নিয়ে এসেছি। জুনের আগেই সিগারেট কান্ড চলছে দেখবে কে।

তার মত একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহী শহরের আবুল হোসেন ডিলার। তারাই বেশি মজুত শুরু করেছেন। অনেকে এসবের দিকে নজর দেয় না। কিন্তু অন্য জিনিস বাকিতে পাওয়া গেলেও সিগারেট নিতে হয় নগদ টাকায়। বাজারে যে ভাবে সিগারেটের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হয়েছে তাতে করে দুই নম্বর সিগারেটে সয়লাব হয়ে পড়বে বাজার। এজন্য জরুরি ভাবে বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ হুশিয়ার করে বলেন, অপ্ল দিনের মধ্যে সকল বিষয়ে জোরালো অভিযান পরিচালনা করা হবে। যারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাজার অস্থির করছেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *