তানোরে মানহীন শিক্ষক সমিতির প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা বিব্রত শিক্ষক শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী শিক্ষা

সারোয়ার হোসেন, তানোর: রাজশাহীর তানোরে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির চাপিয়ে দেওয়া মানহীন প্রশ্নপত্র নিয়ে বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন শিক্ষক মহল বলে অভিযোগ উঠেছে ।শুধু তারাই না শিক্ষার্থীরাও বেকায়দায়। ফলে এসব প্রশ্নের কারনেই মেধা শূন্য হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

জানা গেছে, চলতি মাসের ২ রা জুন উপজেলায় অর্ধবার্ষিক পরিক্ষা শুরু হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক সমিতির আওতায় রয়েছে ৫৩ টি স্কুল। এসব স্কুলে সমিতি জোরপূর্বক প্রশ্ন পত্র দিয়েছেন। এসব প্রশ্নপত্র এতই মানহীন যা কল্পনাতীত।

বেশিকিছু প্রধান শিক্ষকরা জানান, নিয়ম হচ্ছে যে যে বিষয়ের শিক্ষক তারা প্রশ্ন পত্র তৈরি করবেন। কিন্তু তানোর শিক্ষক সমিতির সভাপতি চাপড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর ও সম্পাদক আকচা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন জোর করে এবং এমপির ভয় দেখিয়ে প্রশ্ন পত্র তৈরি করে দিয়েছেন। এত মানহীন প্রশ্ন পত্র আমরা শিক্ষকতা জীবনে দেখিনি। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন বুঝতেই পারছেন না। শুধু হাতে প্রশ্ন নিয়ে ছুটাছুটি করছে। তাদের কথা কি বলব আমরাই তো বুঝতে পারছিনা। এই সমিতির কোন অধিকার নেই প্রশ্ন পত্র তৈরি করে প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার। তারপরও ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রশ্ন পত্র দিয়েছেন।

দরগাডাঙ্গা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, আমরা সমিতি থেকে প্রশ্ন নিব না।কিন্তু এমপির ভয় দেখিয়ে প্রশ্ন দিয়েছে। এভাবে চললে তানোরে শিক্ষা ব্যবস্হা অচিরেই ধ্বংস হবে। যারা তাদের সমিতির আওতায় নাই সে সব স্কুলের প্রশ্নপত্রের যে মান তার পাঁচ ভাগও মান নেই তানোর শিক্ষক সমিতির প্রশ্নে। শুধু তাই না তারা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেরও টাকা দিচ্ছে না।
চন্দন কোঠা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, তানোর শিক্ষক সমিতির উপদেষ্টা এমপি মহোদয়। তার নাম করে সভাপতি সম্পাদক এসব মানহীন প্রশ্ন দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্হা ধ্বংস করার পায়তারা শুরু করেছেন। তারা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দের ভাতাও দিচ্ছে না। আমার চাচাকে মাত্র ৩০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকি টাকার জন্য কয়েকমাস ধরে ঘুরেও লাগাল মিলছে না।

তিনি আরো জানান, এমপিকে সমিতির উপদেষ্টা করে সভাপতি সম্পাদক যা খুশি সেটাই করছেন।
আগামীতে আর সমিতিতে থাকবনা।এত অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।

বনগাঁ চকরহমত স্কুলের দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক মাহবুর জানান, প্রশ্ন মানহীন এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কি করার আছে। এভাবে প্রশ্ন দেওয়া ঠিক না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু শিক্ষকরা জানান, এমপি সমিতি উপদেষ্টা এই এলাকার শিক্ষা ব্যবস্হা উন্নত করতে সমিতি করেছেন।কিন্তু দুই শিক্ষক নেতা সেটাকে পুজি করে বানিজ্যিক করন করছেন।তারা যে প্রশ্ন দিয়েছেন তা একেবারেই মানহীন।

উপজেলায় মাধ্যমিক নিম্ম মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬৭ টি, তার মধ্যে তানোর সমিতির আওতায় ৫৩ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা ৫৩টি প্রতিষ্ঠানে তানোর সমিতির প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা হচ্ছে। বাকিগুলো বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলা শাখার প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা হচ্ছে।

তানোর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকচা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন জানান, সারা দেশে সমিতির প্রশ্নে পরিক্ষা হয়। আমরা আলাদা সমিতি আমাদের প্রশ্নপত্রে ৫৩ টি স্কুলে পরিক্ষা হচ্ছে। এভাবে শিক্ষা কে ভাগ করা যায় কিনা এবং আপনাদের প্রশ্নপত্র একেবারে মানহীন জানতে চাইলে তিনি জানান মানহীন সঠিক না।

সমিতির সভাপতি চাপড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান জানান, সব বিষয়ে মাথা দিলে হবে না,সমিতির উপদেষ্টা এমপি সাহেব বুঝতে হবে। এমপি কি আপনাকে প্রশ্ন পত্র দিতে বলেছে জানতে চাইলে কোন জবাব না দিয়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান জানান, তাদের প্রশ্নপত্র তৈরি করার কোন নিয়ম নাই।আমি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি, কিন্তু তারাও গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

 

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *