আড়ানী পৌরসভা : ভোগান্তি বাড়ছে নাগরিক সেবায়

রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি: চাকরি,চিকিৎসার খুব প্রয়োজন হলেও মিলছে না নাগরিকত্ব সনদ পত্র। পাচ্ছেন না জন্ম নিবন্ধনের সনদও। এমনটাই জানালেন, রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভায় আসেন আড়ানি চকসিংগা গ্রামের লিটন আলী। এক সপ্তাহ ধরে ঘুরেও পাননি জন্ম নিবন্ধনের সনদ। তিনি জানান,শুধু আমিই নয়, আমার মতো অনেকেই জন্ম নিবন্ধনের সনদ কিংবা চাকরি,চিকিৎসার প্রয়োজনেও নাগরিকত্ব সনদ না পাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন। পৌরসভায় এসে ঘুরে যাচ্ছেন লিটন আলীর মতো অনেক লোকজন। বিশেষ প্রয়োজন হলেও মিলছেনা তাদের নাগরিকত্ব কিংবা জন্ম নিবন্ধনের সনদ।

কারণ হিসেবে জানা গেল, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র মুক্তার আলী কারাগারে থাকায় নাগরিক সেবায় ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরবাসি। কিন্ত এ নিয়ে কোন ভূমিকা নেই পৌর কর্তৃপক্ষের ।

জানা যায়, উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় পৌর মেয়র মুক্তার আলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত ৬ জুন গ্রেপ্তার হন মেয়র। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে নাগরিকদের নুন্যতম সেবাও দিতে পারছেননা প্যানেল মেয়ররা। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরসভার নাগরিক। প্রশ্ন উঠেছে, মেয়রের অনুপস্থিতিতে যদি প্যানেল মেয়ররা কাজ করতে না পারেন,তাহলে তাদের সেই পদে থাকার দরকার কি?

আড়ানী পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ কার্তিক চন্দ্র হালদার বলেন, মেয়র না থাকায় পৌরসভার জনগণ আমার কাছেও আসছেন। কিন্তু অফিসিয়ালভাবে আমাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই কোন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করার এখতিয়ার আমার নেই। তবে পৌরবাসি ভোগান্তিতে রয়েছেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য,২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহিদুজ্জামান শাহিদকে পরাজিত করে মুক্তার আলী মেয়র নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের আগে বোমাবাজি, হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। নির্বাচনের পরে এক কলেজ শিক্ষককে মারধরের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।

গত বছরের ৬ জুলাই দিবাগত রাতে মেয়র মুক্তারের পিয়াদাপাড়া বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। ওই সময় পালিয়ে যান মুক্তার আলী। তার বাড়ি থেকে নগদ টাকা,স্বাক্ষরিত চেক, আগ্নেয়াস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করা হয়। পরে মেয়র মুক্তারের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০) এবং দুই ভাতিজা সোহান (২৫) ও শান্তকে (২৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করে।

গত বছরের ৯ জুলাই গ্রেফতার হন মেয়র মুক্তার আলী। এরপর ১২ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মেয়র মুক্তার আলীকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন কারাবরণ শেষে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। মহামান্য হাইকোট বিভাগে রীট পিটিশনের আদেশক্রমে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই প্রত্যাহার আদেশের চিঠি পেয়ে এ বছরের ২২ মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থালে যোগদান করেন। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেশ হওয়ায় গত ৬ জুন আবারো গ্রেপ্তার হন মেয়র মুক্তার।

 

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *