স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)র বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিএসআই মনিরের বিরুদ্ধে অর্থ নিয়েও ৬০ গ্রাম হেরোইনের মিথ্যা মামলা দেয়ার অভিযোগে আরএমপি কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ পত্র দিয়েছে বোয়ালিয়া থানাধীন রাণীনগর হাদীর মোড় এলাকার মৃত: সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ভুক্তভোগীর মা সুফিয়া বেওয়া (৭০)। আজ রবিবার বিকেলে তিনি এ অভিযোগ করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, বোয়ালিয়া থানাধীন রাণীনগর হাদীর মোড় এলাকার মৃত: সাইফুল ইসলামের স্ত্রী অভিযোগকারী সুফিয়া বেওয়া (৭০) এর ছেলে সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে “রাজীব বিরিয়ানী হাউজ” নামে হোটেলের কর্মচারীর কাজ করে। গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত্রী ১১ টার সময় কর্মস্থল থেকে অটোতে করে বাসায় ফেরার পথে বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ফাঁড়ির টি এসআই মিনারজুল হক সহ আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য অটো রিক্সা থামিয়ে অভিযোগকারীর ছেলে মফিকে ওয়ারেন্ট আছে বলে টেনে ফাঁড়ির মধ্যে নিয়ে যায়। পরে অভিযোগকারী তার মেয়ে সিমাকে নিয়ে ফাঁড়িতে যায়।
এ সময় ফাঁড়ির ইনর্চাজ টিএসআই মনিরুল ইসলাম তার ছেলে মফির নামে একাধিক মাদক মামলা আছে এ জন্য তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান। তার নামে ইয়াবা ও হেরোইনের মামলা হবে। তবে ৩০ হাজার টাকা দিলে ছোট মামলা দিয়ে চালান দিবো। না তো এমন মামলা দিবো সারা জীবন জেলে পঁচবে এমন কথা বললে অভিযোগকারী সুফিয়া বেওয়া টিএসআই মনিরুলের দাবিকৃত অর্থ সংগ্রহে ছোটাছুটি শুরু করেন। এরই মধ্যে কয়েকবার টিএসআই মনিরুল ইসলাম তার ব্যবহৃত ০১৭২৬-৮৫৩৫১৭ নাম্বার থেকে অভিযোগকারীর ০১৭৫৮-৪৩৩৯৯৩ নাম্বার ফোন দিয়ে দ্রুত টাকা নিয়ে আসার জন্য বলেন নাতো বড় মামলা দিয়ে চালান দিবো বলে জনালে ছেলেকে মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচাতে মানুষের কাছ থেকে ধার করে ১৯হাজার টাকা ফাঁড়ির ইনর্চাজ টিএসআই মনিরুল ইসলামকে দিলে মনিরুল ইসলাম অভিযোগকারীকে ছেলে,মেয়ের কসম দিয়ে বলেন ‘এ টাকার বিষয় আপনি আর আমি ছাড়া অন্য কেউ জেনো না জানে, আপনি বাসায় চলে যান। আপনাকে কোর্টে বা থানায় যাওয়া লাগবেনা। রবিবার আমি আপনার ছেলেকে বের করে এনে দিবো।
পরে বৃহস্পতিবার কোর্টে গিয়ে উকিলের মাধ্যমে জানতে পারেন অভিযোগকারীর ছেলে মফির নামে ৬০ গ্রাম হেরোইনের মামলা দিয়ে চালান করেছে টিএসআই মনিরুল। যাহার মামলা নং ২৫/৯৩০। পরে অভিযোগকারী মামলার কাগজ তুলে বাড়ি ফিরে এসে মামলার স্বাক্ষী ১। মো: আরাফাত হোসেন (৩৫), পিতা মৃত: আকবর হোসেন ২। মো: রতন (২৮) পিতা মৃত: কলিমউদ্দিন উভয় সাং- রামচন্দ্রপুর, খরবোনা নদীর ধার দ্বয়ের সাথে কথা বললে তারা বলেন শফিকুল ইসলাম মফিকে বোসপাড়া ফাঁড়ির সামনে অটো থেকে নামিয়ে ফাঁড়ির ভিতরে নিয়ে যায়। পরে আমাদের (স্বাক্ষীগনকে) ফাঁড়িতে ডেকে ওয়ারেন্ট আছে মর্মে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। তবে মফির কাছ থেকে পুলিশ মাদক পেয়েছে এমনটি দেখেনি তারা । এমনকি মামলার এজাহারে উল্লেখিত মফিকে রানীনগর হাদীরমোড় যাত্রী ছাউনির সামনে থেকে গ্রেফতারের বিষয়টিও মিথ্যা বলে বলেন তারা। সর্বশেষে অর্থ নিয়েও এমন মিথ্যে মামলায় ছেলেকে ফাঁসিয়ে কারাগারে প্রেরনের বিষয়টি তদন্তপূর্বক বিবেচনা করে অভিযোগকারীর ছেলেকে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি দিয়ে বোসপাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ টিএসআই মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্তপূবর্ক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আরএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন অভিযোগকারী সুফিয়া বেওয়া ।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বোসপাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ টিএসআই মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর মফিকে রানীনগর হাদীরমোড় যাত্রী ছাউনির সামনে থেকে ৬০ গ্রাম হেরোইনসহ আটক করা হয়। আটক মফির বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। আর তার পরিবারের কাছে অর্থ নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বিকার করে বলেন মাদকের টাকা খাওয়া আর কুকুরের মাংশ খাওয়া সমান মনে করেন বলে জানান তিনি।
স্ব.বা/শা