সাঁকোপাড়া জামে মসজিদে আশুরা উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে রাজশাহী নগরীর সাঁকোপাড়া জামে মসজিদে আশুরার তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাদ এশা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আশুরা সম্পর্কে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেন সাঁকোপাড়া জামে মসজিদের খতিব উদীয়মান তরুণ বক্তা হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম।

তিনি মহররম সম্পর্কে বলেন, মহানবী (সা.) এর প্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে চক্রান্তকারী ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে পবিত্র এই মহররম মাসের ১০ তারিখে নির্মমভাবে কারবালার প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন। সেদিন প্রকৃত ইসলাম ও সত্যের জন্য হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ইয়াজিদ বাহিনীর কাছে মাথা নত না করে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। হজরত ইমাম হোসেন (রা.) সেদিন ন্যায় ও সত্যের জন্য চরম আত্মত্যাগের যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা অনুকরণীয়।

তিনি বলেন, মহররম অর্থ মর্যাদাপূর্ণ, তাৎপর্যপূর্ণ। যেহেতু অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্য ও রহস্যময় তাৎপর্য নিহিত রয়েছে এ মাসকে ঘিরে। এ মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ ছিল, এসব কারণেই এ মাসটি মর্যাদাপূর্ণ। তাই এ মাসের নামকরণ করা হয়েছে মহররম বা মর্যাদাপূর্ণ মাস। আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা ১২টা। তন্মধ্যে চারটি হলো সম্মানিত মাস। এই চারটি মাস বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে। এই চার মাস হলো জিলক্বাদ, জিলহজ, মহররম ও রজব মাস।

আশুরা সম্পর্কে বলেন, মহররম মাস সম্মানিত হওয়ার মধ্যে বিশেষ একটি কারণ রয়েছে আশুরা (মহররমের ১০ তারিখ)। এ আশুরার দিনে সংঘটিত হয়েছে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা ও হৃদয়বিদারক কাহিনী। এই আশুরার দিনে হজরত মুসা (আ.) ফিরআউনের অত্যাচার থেকে নিষ্কৃতি লাভ করেন। এই দিনে মহান আল্লাহ তায়ালা চিরকালের জন্য লোহিত সাগরে ডুবিয়ে শিক্ষা দিয়েছিলেন ফিরাউন ও তার বিশাল বাহিনীকে।

এদিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হজরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করেছিলেন। এদিন নুহ (আ.) এর প্লাবন সমাপ্ত হয় এবং নুহ (আ.) এর জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ নামক পর্বতে গিয়ে থামল। এদিন হজরত ইব্রাহিম (আ.) জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকু- থেকে নিরাপদে মুক্তি পেয়েছিলেন। এদিন হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এদিনে হজরত আইয়ুব (আ.) রোগমুক্তি লাভ করেছিলেন।

এদিনেই হজরত সুলাইমান (আ.) তাঁর হারানো রাজত্ব ফিরে পেয়েছিলেন। এদিনে হজরত ইয়াকুব (আ.) তার হারানো পূত্র হজরত ইউসুফ (আ.)কে ৪০ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন। এদিনে হজরত ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এদিনেই তাঁকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিলো। আশুরার পবিত্র এই দিনে আরও বহু ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল।

আশুরার তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মোঃ সোহেল রানা, মসজিদ কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আজিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম আমিন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান মাসুদ।

অন্যান্যদের মধ্যে, মসজিদের মুসল্লি খলিল মন্ডল, মোঃ আব্দুল মান্নান, মোঃ আব্দুল হান্নান, মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ বাবলু, মোঃ আব্দুল কাদের প্রমূখ। আলোচনা শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *