জিপ গাড়ীর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সেনা সদস্য নিহত, নিহতের বাঘার বাড়িতে শোকের মাতম

রাজশাহী

বাঘা প্রতিনিধি : কয়েকদিন পর ছুটিতে আসার কথা বলছিলো সেনা সনদস্য শিমুল আগমেদ। কিন্তু তার আগেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিপ গাড়ি খাদে পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন সেনা সদস্য শিমুল আহমেদ । আহত হন আরও তিনজন সেনা সদস্য। তারা হলেন-গাড়িচালক কর্পোরাল প্রবীর, সেনা সদস্য ফরহাদ ও সেনা সদস্য ইব্রাহীম। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে বান্দরবনের থানচি-আলীকদম সড়কের ২৮ কিলোমিটার এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঞটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানচি থানার এসআই মহিউদ্দিন।

এখন মরদেহ বাড়িতে পৌঁছার অপেক্ষায় স্বজন-প্রতিবেশিরা। নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নির্বাক চেয়ে আছেন বাবা তাহেদ আলী । বুক চাপড়ায়ে কাঁদছে মা পপি বেগম। বলেছিলেন, আমারে ফেলা থুইয়া অকালে চলে গেলি বেটা। তুই না বলেছিলি, ছুটি পেলেই বাড়িতে আসবি। শোকে কাতর ২বছরের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী স্বম্পা আক্তার। ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠে তিনি বলেন, মুঠোফোনে তার সাথে শেষ কথা হয়েছিল সোমবার (১৫ আগষ্ট) রাতে। বলেছিল, মা মনির দিকে খেয়াল রেখ। সে যেন দুষ্টামি না করে। তার জন্য নতুন ডিজাইনের পোষাক নিয়ে আসবো। নতুন পোষাকের অপেক্ষায় থাকা ৬ বছর বয়সের একমাত্র কণ্যা স্বর্ণালী ফুপিয়ে ফপিয়ে বলছে আমার পোষাক নিয়ে আসবে কে?।

বুধবার(১৭-০৮-২০২২) নিহত সেনা সদস্যর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের শোকের মাতম। স্বজনরা জানান,কয়েকদিন পর ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসার কথা বলেছিল সেনা সদস্য শিমুল আহমেদ । কিন্তু তার আগেই কর্মস্থল এলাকায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। সেনা সদস্য শিমুল আহমেদ এর বাড়ি বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা মিস্ত্রিপাড়া গ্রামে।

নিহত শিমুলের মামা, আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ঝিনা ওয়াডের্র মেম্বর ও ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে রামু ক্যান্টনমেন্টে নেওয়া হয়। সেখানে জানাযা নামাজের পর মরদেহ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে। আমরা সেই অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি বলেন প্রথমে হেলিকপ্টারে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর কথা থাকলেও আবহওয়া খারাপের কারণে সেনা ক্যান্টনমেন্টের গাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা হয়েছে। বৃহসপতিবার (১৮ আগষ্ট) ভোরে মরদেহ পৌঁছবে বলে ধারনা করছি। তিনি জানিয়েছেন, মরদেহ দাফন করা হবে নিজ উপজেলার আড়ানি ইউনিয়নের ঝিনা মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের কবরস্থানে।

পারিবারিক সুত্রে জানা যায়,শিমুল আহমেদ ২০১০ সালে এসএসসি পাশ করেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দয়ারামপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বদলি হয়ে বান্দরবনের রামু ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। তার ছোট ভাই এক ভাই ও বোন রয়েছে। ভাই সোহাগ আহম্মেদ কৃষি কাজ করেন। বোন তামান্না খাতুন স্থানীয় স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।

বুধবার(১৭ আগষ্ট) বিকেল ৬টায় কথা হলে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আমার ইউনিয়নের একজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য এলাকার তিনজন সেনা সদস্য আহত হয়েছে। নিহতের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়নি। পৌঁছামাত্র পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *