স্বদেশ বাণী ডেস্ক: নাটোরের লালপুরের ছাত্রলীগ কর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন খান্নাস হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনকে খালাস দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই রায়ের আদেশ দেন।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলেন, লালপুরের বাহাদুরপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে শুকুর হোসেন ওরফে বাবু, শহিদুল ইসলাম মাস্টারের দুই ছেলে শামীম হোসেন ও সুজন হোসেন এবং আব্দুল মালেকের ছেলে আব্দুল মতিন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন একই এলাকার ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে সান্টু মিয়া।
এছাড়া বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছে, লালপুর উপজেলার সাইপাড়া এলাকার আছান ড্রাইভারের ছেলে আলম, কচুয়া এলাকার আলাল উদ্দিনের ছেলে কালু, কাবুল, কৃষ্ণরামপুর গ্রামের বিচ্ছাদ আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম, ইসমাইলের ছেলে সাবুল, সুন্দর গাড়া গ্রামের নইব মন্ডলের ঝেলে জেকের আলী, নওদাপাড়া এলাকার ছলিম উদ্দিনের রবিউল ইসলাম, শেরপাড়া এলাকার ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে আশরাফ আলী, খোশবার আলীর ছেলে ছইমুদ্দিন, বাহাদুরপুর গ্রামের সামছের আলীর ছেলে আদম আলী এবং কচুয়া গ্রামের অছিমুদ্দিনের ছেলে আলাল উদ্দিন ও আতাউর রহমান।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সহযোগী আইনজীবি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নাটোরের লালপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামে ছাত্রলীগ কর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন খান্নাসকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে তৎকালীন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীরা। সে সময় বেশ কিছু বাড়ি ঘরে হামলা চালায় তারা। পরবর্তীতে বিএনপি ও তাদের সন্ত্রাসীরা মামলা করতে বাধা দেয় নিহতের পরিবারকে। মামলায় বাধা পেয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখলে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শুকুর মৃধা বাদী হয়ে ২৩ জনকে আসামী করে লালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন তদন্ত শেষ করে ১৮ জনের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এছাড়া এই মামলায় হামিদুল ইসলাম, আব্দুল খলিল, আব্দুল জলিল, ফারুক হোসেন এবং আবেদ আলীকে রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, মামলায় অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি থাকায় প্রত্যাশিত রায়ের প্রতিফলন হয়নি। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে মামলা নিয়ে লড়াই করা হবে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক দীর্ঘ দেড় ঘন্টা শুনানি করে মামলার রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে নিহতের পরিবারসহ এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।