বাঘায় চলছে পুকুর খনন, নির্বিকার প্রশাসন

বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় দেদারসে চলছে পুকুর খনন। এর ফলে একদিকে কমছে আবাদি জমি অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতার। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে জলাশয় সংস্কারের দাবি করা হলেও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সমতল জমিতে পুকুর খনন করতে। অনেকেই লিজ নিয়ে পুকুর খনন করছেন বলে জানা গেছে। খনন যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে এসব পুকুর খননের কাজ চলছে দিবালোকে। প্রায় অর্ধ শতাধিক জায়গায় পুকুর খনন চললেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকা পালনের দাবি করেছে স্থানীয়রা ।

জানা গেছে, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের মিয়া পাড়া, দিঘার চুনির বিল, কামারপাড়া বিল, পীরগাছা ও মনিগ্রাম ইউনিয়নের হেলালপুর, কলাবাড়িয়া, হাবাসপুর এবং বাজুবাঘা ইউনিয়নে বারখাদিয়া, নওটিকা, আরিফপুর, ক্ষুুদে ছয়ঘটি, জোতরাঘব, নিশ্চিন্তপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খনন যন্ত্র দিয়ে (ভেকু) চলছে পুকুর খনন। বেশিরভাগ পুকুর খনন চলছে ফসলি সমতল জমিতে।

বাউসা গ্রামের রতন কুমার, বারখাদিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম, জোতরাঘব গ্রামের চঞ্চল মাহমুদ জানান, যেভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে, তাতে করে আগামি বছরগুলোতে ফসলি জমি বলে কিছু থাকবে না। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই বিগত বছরগুলোতেও পুকুর খনন করা হয়েছে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সুষ্টি হয়েছে। আর বর্তমানে আবাদি যে জমিগুলো রয়েছে,তার অধিকাংশ জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদি রয়েছে। সব মিলে আশঙ্কাজনক হারে কমছে ফসলি জমি।

বাঘা-লালপুর উপজেলার জলবদ্ধতা নিরসন কমিটির সাধারন সম্পাদক প্রভাষক হীরেন্দ্রনাথ বলেন,অপিরকল্পিত পুকুর খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ৫০ হাজার বিঘা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় পড়ে শত শত বিঘা জমিতে রোপন করা আম গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এটি নিরসনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

মনিগ্রাম ইউনিয়নের হাবাসপুর গ্রামের অসিত কুমার পুকুর খননের সত্যতা স্বিকার করে বলেন, নতুন করে পুকুর খননের কাজ করছেননা। তার দাবি আগের খনন করা পুকুর সংস্কার করেছেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, নতুনভাবে ১১ বিঘা ফসলী জমিতে তিনি পুকুর খননের কাজ করছেন। তার মতো অনেকেই সমতল ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন বলে জানা গেছে।

তেথুলিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিন বলেন, নিচু জমিতে ফসল হয় না। তাই পুকুর খনন করছি। অন্যদিকে ইট প্রস্তুতের জন্য প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পতিত-–মজা জমি থেকে মাটি তুলছেন বলে দাবি করেছেন ভাটার মালিক আলা উদ্দীন।

বাউসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান শফিক বলেন, আইন বহির্ভতভাবে অনেকেই পুকুর খনন করছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, জমির আকার পরিবর্তন করে অনেকেই পুকুর খনন করছে। এতে করে ফসলের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা বলেন, পুকুর খননের সংবাদে অভিযান চালিয়ে ভেকু সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। নতুনভাবে যে সকল এলাকায় পুকুর খনন চলছে, সেই এলাকায় অভিযান চালানো হবে এবং পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান নির্বাহি অফিসার।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *